দল থেকে ভাগাতে রিমান্ডে নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আদার বনে শিয়াল রাজার মতো প্রধানমন্ত্রী ছুটে বেড়াচ্ছেন। এবার সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়াই আগামী একতরফা নির্বাচন শুধু সরকারের ক্ষমতার নবায়ন নয়, বাংলাদেশকে ধ্বংস করার লাইসেন্স। তবে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় থাকতে এবার তার সকল সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, আন্দোলনরত নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নিয়ে যেভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে তা জার্মানির কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের অত্যাচারের কাহিনিকেও হার মানায়। দল পরিবর্তনের জন্য কারা অন্তরীণ গণতন্ত্রকামী রাজনীতিবিদদের চরম অসম্মানজনকভাবে তাদের সম্মতি আদায়ের জন্য জুলুম করা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। রিমান্ডে নির্যাতন করে নেতাকর্মীদের মিথ্যা সাক্ষ্য আদায়ের চেষ্টা চলছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের নিপীড়ন-নির্যাতন, হেনস্তা ও হেয় করেও এদের তটস্থ করতে না পেরে উৎপীড়নের পথ অবলম্বন করেছে সরকার।
তিনি বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ বিএনপি নেতাকর্মীদের পরিকল্পিতভাবে অসুস্থ করতে কাজ করছেন। আপনারা দেখছেন কদিন পরপরই বিএনপির নেতাদের কারাগারে মৃত্যুর সংবাদ। বর্তমান সরকার আর ক্ষমতায় থাকার সুযোগ পাবে না। বারবার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা যাবে না। জনগণের অটুট আন্দোলন চলছে এবং তা সফল হবে ইনশাআল্লাহ। সরকার কার্যকর বাংলাদেশ চাননা। সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব অন্যের হাতে তুলে দিচ্ছেন। অর্থনীতির সমস্ত পথ ধ্বংস করে বাংলাদেশকে উপসংহারহীন পরিণতির দিকে ধাবিত করছেন। উৎপীড়ন-নিপীড়ন ও নির্যাতনের পথ অবলম্বন করে অথবা লোভ-প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধ ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করবেন এই সুযোগ এবার তার হবে না। সকল সুযোগ তার বন্ধ হয়ে গেছে।
পোশাক শিল্প ধবংসের চক্রান্ত হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ক্রেতাদের মতামত উপেক্ষা করে সরকার সমর্থক সুবিধাবাদী গোষ্ঠী শোষণ নীতির পক্ষে সরকারের অবস্থান, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি দমনে হত্যা নিষ্পেষণ, অপিরণামদর্শী সিদ্ধান্ত এবং প্রতিবেশী দেশের স্বার্থে এই সর্ববৃহৎ শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নেওয়া হয়েছে। শ্রম অধিকার সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র নতুন শ্রমনীতি ঘোষণার পর বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রায় অবধারিত বলে আশঙ্কা করছেন মালিকরা। রিজভী আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৪১৫ জনের অধিক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার ও ১৯ মামলায় ২০৪৫ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গত ১৫ নভেম্বর নির্বাচনী তপশিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত মোট গ্রেপ্তার ৮২৬০ জনের অধিক নেতাকর্মী, মোট মামলা ৩০২টি, মোট আসামি ৩৩৫৯০ জনের অধিক নেতাকর্মী, মোট আহত ১২২৭ জনের অধিক নেতাকর্মী এবং মোট মৃত্যু সাতজন।