পবিত্র মাহে রমজানে অসহায়, দুস্থ-কর্মহীন ভাসমান মানুষের জন্য বগুড়ায় এক টাকার বিনিময়ে ইফতার দিচ্ছে ‘লাইফ লাইন’ উই আর ফ্যামিলি। এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কয়েকজন তরুণ। বর্তমানে রমজান মাসে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। কিছুক্ষণ পরপর রিকশাচালক ও পথচারীরা তাদের কাছ থেকে ইফতার কিনে নিচ্ছেন। প্রতিটি ইফতারের প্যাকেটের জন্য ক্রেতাকে পরিশোধ করতে হচ্ছে এক টাকা। সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেলে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় ইফতারের প্যাকেট বিতরণ করতে দেখা যায় তাদের।
ইফতার গ্রহীতারা জানান, একজনের খাবারের উপযোগী এক টাকার ইফতারির বক্সে থাকে বিরিয়ানি। প্রতিদিন ইফতারের আগে এক টাকার এ ইফতারির বক্স স্বল্প আয়ের পরিবারের শিশু-কিশোর ও রোজাদারদের মধ্যে এক অনাবিল আনন্দ বয়ে আনে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিকেল হলেই বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় জড়ো হন ইফতার কিনতে আগ্রহী অসহায় মানুষগুলো। তাদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড় করিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেন কয়েকজন তরুণ। তবে গতকাল সোমবার এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হন বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে দোয়া প্রার্থী এসএম সোহাগ হোসেন। এদিন তিনি নিজ হাতে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এদিকে ইফতার কিনতে আসা রিকশাচালক রাজু আহমেদ বলেন, রমজানে খেটে খাওয়া অসহায় মানুষদের জন্য এক টাকায় ইফতার বিতরণ করছে। এটা অনেক ভালো একটা আয়োজন। আমি গত বছর রমজানেও এই সংগঠনের পক্ষ থেকে এই দামে ইফতার কিনেছিলাম। আমাদের অনেক উপকার হয়।
শহরের চেলোপাড়া বউ বাজার এলাকা থেকে ইফতার কিনতে আসা মেরিনা বেগম বলেন, আমি প্রতিদিনই এখান থেকেই ইফতার নেই। বেশ ভালো লাগে এদের ইফতার।
এ বিষয়ে ‘লাইফ লাইনের’ উদ্যোক্তা আহ্সান হাবিব সেলিম বলেন, অসহায়, দুস্থ, ভাসমান, কর্মহীন ও খেটে খাওয়া মানুষের কথা চিন্তা করে ইফতার বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। শত কষ্টের মধ্যে সিয়াম সাধনা করছেন মানুষ। তাদের প্রায় দিনই ঠিকমতো ইফতারি জুটছে না। তাদের কথা চিন্তা করেই এ উদ্যোগ। গত মঙ্গলবার পহেলা রমজান থেকে বগুড়া শহরে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য এ কার্যক্রম শুরু করেছি। চলবে পুরো রমজান মাস।
অন্যান্য উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেসবুকে ‘লাইফ লাইন’ উই আর ফ্যামিলি নামে সংগঠনের ব্যানারে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে বগুড়া শহরে প্রতিদিন অন্তত ২০০ জনের হাতে ইফতার তুলে দেয়া হচ্ছে। সামর্থ্য অনুযায়ী ধাপে ধাপে এই সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। প্রতিটি ইফতারের প্যাকেটে রয়েছে বিরিয়ানি।
তারা আরও জানান আমরা রমজান মাসে অসহায় রোজাদার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টাও করছি। এটা তেমনি একটি উদ্যোগ। কিন্তু এটাকে যেন কেউ ত্রাণ বা দয়া মনে না করে তাই এর ন্যূনতম একটি দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ এই ইফতার তিনি কিনেই নিচ্ছেন। স্থানীয়রা জানান, নামমাত্র মূল্যে ইফতার তুলে দিয়ে সত্যিই মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছে তরুণদের এই সংগঠনটি।।