মহাস্থান নিউজ:
পাবনার চাটমোহরে আপন মামাতো ভাইয়ের হাতে অপহরণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপহৃত স্কুলছাত্র মাহিম হোসেন (১২) কে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৪ জুলাই) বিকেলে নাটোরের বনপাড়া-হাটিকুমরুল সড়কের রাজ্জাক মোড় এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মামাতো ভাই আলী শারাফী (২৬) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মাহিম হোসেন উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের মস্তালিপুর গ্রামের নাজমুল হোসেনের ছেলে ও চড়ইকোল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। গ্রেপ্তারকৃত যুবক আলী শারাফী একই উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের করকোলা গ্রামের রবিউল করিমের ছেলে আলী শারাফী (২৬)। এ ঘটনায় থানায় উদ্ধার হওয়া ওই স্কুলছাত্রের মা মাবিয়া খাতুন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মাহিম ও আলী শারাফী সম্পর্কে আপন মামাতো-ফুপাতো ভাই। রোববার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যায় আলী শারাফী তার ফুপু মারিয়া খাতুনের বাড়ি মোস্তালিপুর গ্রামে বেড়াতে যায়। এরপর ফুপাতো ভাই আলী শারাফীকে সঙ্গে নিয়ে সাইকেলে চেপে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে স্থানীয় বাজারে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর মাহিমের বাবার মোবাইলে আলী শারাফী ফোন দিয়ে পঞ্চাশ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে মাহিমকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়া হয়।
এরপর অভিযুক্ত আলী শারাফীকে মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা পাঠান মাহিমের বাবা নাজমুল হোসেন। এরপর আরও চল্লিশ হাজার টাকা দাবি করে বার বার ফোন দিতে থাকে। টাকা না দিলে তার ছেলের (মাহিম) লাশ পাঠানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
এদিন রাতেই মাহিমের বাবা বিষয়টি চাটমোহর থানা পুলিশকে জানান। এরপর চাটমোহর থানার ওসি সেলিম রেজার নির্দেশে চাটমোহর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নয়ন সরকার, এসআই শামসুল, এসআই রফিকুল সঙ্গীয় ফোর্সসহ মাহিমকে উদ্ধারের জন্য অভিযানে নামে। পরে প্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্তের পর সোমবার বিকেলে রাজ্জাক মোড় এলাকা থেকে স্কুলছাত্র মাহিমকে উদ্ধার এবং অভিযুক্ত আলী শারাফীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
স্কুলছাত্র মাহিম জানায়, স্থানীয় বাজারে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে রোববার সন্ধ্যায় তাকে মামাতো ভাই আলী শারাফী নিয়ে যায়। পরে তাকে ভ্যানে করে বনপাড়া-হাটিকুমরুল সড়কে নিয়ে গিয়ে বাস যোগে ঢাকার সাভার এলাকায় নিয়ে যায়। সোমবার সকালে সেখান থেকে ফিরে তারা বনপাড়া এলাকায় আসে। পরে রাজ্জাক মোড় এলাকায় আসার পর তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া স্কুলছাত্র মাহিমের বাবা নাজমুল হোসেন পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, মাহিমকে অপহরণের পর মোবাইলে আলী শারাফী পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করে। আপন মামাতো ভাই অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করবে এই ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে। আমার ছেলেকে (মাহিম) খুব অল্প সময়েল মধ্যে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে দিয়েছে পুলিশ। এ কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই বলে জানান তিনি।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা জানান, মৌখিকভাবে বিষয়টি শোনার পরেই উদ্ধার অভিযানে নামে পুলিশ। খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্তের পর মাহিম নামের ওই স্কুলছাত্রকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। অভিযুক্ত যুবককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপহরণ মামলা দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সকালে গ্রেপ্তারকৃত শারাফীকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।