মহাস্থান নিউজ:
টাঙ্গাইলের অভ্যন্তরীণ নদীগুলোতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নৌকা তৈরির ধুম পড়েছে। মৌসুমী কাঠমিস্ত্রিরা এখন এ কারণে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। দিনরাত হাতুরি-বাটালের শব্দে মুখর টাঙ্গাইলের নৌকা বিক্রির জন্য পরিচিত হাটগুলো।
জানা যায়, টাঙ্গাইলে ১২টি উপজেলার মধ্যে মধুপুর ছাড়া ১১টি উপজেলায় বর্ষা মৌসুমে যাতায়াতে নৌকার প্রয়োজন হয়। ফলে এ সময় প্রতি বছর স্থানীয় কাঠমিস্ত্রীরা নৌকা বানানোর প্রস্ততি নেন। এ জন্য অনেকে নৌকার হাটের কাছাকাছি জায়গা বেছে নেন। অনেকে অন্য সময় কৃষিকাজ করলেও এ সময় কাঠমিস্ত্রীর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
কাঠমিস্ত্রি বলরাম সূত্রধর, বিশ্বজিৎ সূত্রধর, স্বপন সূত্রধর, পলাশ সূত্রধর, হরিমোহন সূত্রধরসহ অনেকেই জানান, এখন প্রায় প্রত্যেক এলাকার বড় রাস্তা পাকা। ফলে দূরের যাত্রার জন্য কেউ বড় নৌকা তৈরি করে না। বর্ষায় এপাড়া থেকে ওপাড়া যাতায়াতের জন্য ছোট নৌকার প্রয়োজন হয়। তাই ছোট নৌকার কদর বেশি।
অধিকাংশ কাঠমিস্ত্রি জানান, বর্ষা মৌসুমে কাঠমিস্ত্রির কাজ করেই তাদের সংসার চলে। ছোটবেলা থেকে অনেকে বংশ পরম্পরায় এ কাজ করছেন। একটি ছোট নৌকা তৈরিতে তিনজনের ২ থেকে ৩ দিন সময় লাগে। খরচ হয় ৮ থেকে ১৮ হাজার টাকা। হাটে তারা ওই নৌকা ১০ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।
বাসাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের প্রফুল্ল সূত্রধর (৬৫) জানান, তিনি দীর্ঘ ৫৫ বছর কাঠমিস্ত্রির কাজ করছেন। ছোটবেলা থেকেই হাতুড়ি বাটালের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব। বলাবাহুল্য এটি তার বাপ-দাদার পেশা। তাদের কাছেই হয়েছে হাতেখড়ি। এখন বর্ষা মৌসুমে তিনি নৌকা তৈরি করছেন। শুকনো মৌসুমে ঘর, খাট, চেয়ার, টেবিল ড্রেসিং টেবিল, আলনা. আলমারি ইত্যাদি তৈরি করে হাটে বিক্রি করে সংসার চালান।
কাঠমিস্ত্রি রমেন স্যানাল জানান, তিনি চুক্তিতে বায়নায় নৌকা তৈরি করেন। প্রতিদিন ৭০০ থেকে এক হাজার টাকা মজুরি পান। বর্ষার সময় এ কারণে আয়-রোজগার ভালো হয়। শুকনো মৌসুমে তিনি কৃষিকাজ করেন।