মহাস্থান নিউজ:
আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ প্রথম মুখোমুখি হয় আশির দশকে। শুরুর দিকে বাংলাদেশের সামনে দ্বীপ দেশটিকে মনে মতো পাড়া-মহল্লার দল। খেলতে নামলেই হজম করতো ৫ গোল, ৮ গোল। ওইসব ম্যাচ বাংলাদেশের জন্য এখন শুধুই সুখস্মৃতি।
কাঠমান্ডু সাফ (বর্তমানে এসএ) গেমস ১৯৮৪। দশরথ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামে মালদ্বীপের বিপক্ষে। দিনটি ছিল ১৯ সেপ্টেম্বর। প্রথম সাক্ষাতে মালদ্বীপকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। জোড়া গোল করেছিলেন শেখ মোহাম্মদ আসলাম ও আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু। একটি গোল করেছিলে সম্রাট হোসেন এমিলি।
ঢাকা সাফ গেমস ১৯৮৫। বাংলাদেশ গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমেছিল মালদ্বীপের বিপক্ষে। ২৩ সেপ্টেম্বর হওয়া ম্যাচটি বাংলাদেশ জিতেছিল ৮-০ গোলে। জোড়া গোল করেছিলেন শেখ মোহাম্মদ আসলাম, কায়সার হামিদ ও ওয়াসিম ইকবাল। একটি করে গোল ছিল ইলিয়াছ হোসেন ও মামুন বাবুর।
ভারত মহাসাগরের দ্বীপ দেশ মালদ্বীপের ফুটবলের সেই রুগ্ন অবস্থা এখন আর নেই। নেই বাংলাদেশের ফুটবলের রমরমা অবস্থাও। কালের চক্রে এক সময়ের পুচকে মালদ্বীপই এখন আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিপক্ষ।
১৯৮৪ সালে প্রথম দেখায় ৫-০ গোলের হার। ৩২ বছর পর মালদ্বীপ ওই ৫ গোল বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দেয় ২০১৬ সালে ঘারের মাঠে। ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে বাংলাদেশের জালে ৫ গোল দিয়েছিল দ্বীপ দেশটি।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে ১৫ ম্যাচ মোকাবিলা হয়ে গেছে দুই দলের। রোববার ভারতের বেঙ্গালুরুতে ১৬ তম মোকাবিলা দুই দলের। এ ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য ফাইনাল। জিততে না পারলে আরেকটি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় প্রায় নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের।
দক্ষিণ এশিয়ার টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে একবার। আর বাংলাদেশের কাছে এক সময় হালিহালি গোল খাওয়া মালদ্বীপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দুইবার। দুইবারই মালদ্বীপ ফাইনালে হারিয়েছে ভারতকে। ২০০৮ সালে ঘরের মাঠে ফাইনালে ভারতকে হারিয়েছিল ১-০ গোলে এবং ২০১৮ সালে ঢাকায় ফাইনালে ভারতকে হারিয়েছিল ২-১ গোলে।
বেঙ্গালুরুতে এখন মালদ্বীপের হাতে লেখা বাংলাদেশের ভাগ্য। ধারে-ভারে এখন বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে মালদ্বীপ। এই টুর্নামেন্টে দুই দলের শুরুটাও দুই রকম। বাংলাদেশ শুরু করেছে লেবাননের কাছে হেরে, মালদ্বীপ শুরু করেছে ভুটানকে হারিয়ে।
এক সময় বলে-কয়ে হারানো যেতো যে দলকে, সেই মালদ্বীপের বিপক্ষে খেলতে নামলে এখন বুক কাঁপে বাংলাদেশের ফুটবলারদের। রোববার বাংলাদেশ যদি আশির দশকের সেই সুখস্মৃতি ফিরিয়ে আনতে পারে, তাহলেই দারুণ একটা জয় দেখতে পাবে দেশের মানুষ। নাহলে হতাশার পাল্লা ভারি হবে আরো।
এক নজরে বাংলাদেশ-মালদ্বীপ ম্যাচ
১৯৮৪ সাফ গেমস : বাংলাদেশ ৫-০ গোলে জয়ী
১৯৮৫ সাফ গেমস : বাংলাদেশ ৮-০ গোলে জয়ী
১৯৯৩ সাফ গেমস : ০–০ ড্র
১৯৯৫ সাফ গেমস: ০–০ ড্র
১৯৯৭ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ : ১–১ ড্র
১৯৯৯ সাফ গেমস : মালদ্বীপ ২-১ গোলে জয়ী
২০০০ চারজাতি ফুটবল : ১–১ ড্র
২০০৩ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ : বাংলাদেশ ১-০ গোলে জয়ী
২০০৩ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ : (ফাইনাল) ১–১ (টাইব্রেকারে বাংলাদেশ ৫-৩ গোলে জয়ী)
২০১১ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ : মালদ্বীপ ৩-১ গোলে জয়ী
২০১৫ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ : মালদ্বীপ ৩-১ গোলে জয়ী
২০১৬ প্রীতি ম্যাচ : মালদ্বীপ ৫-০ গোলে জয়ী
২০২১ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ : মালদ্বীপ ২-০ গোলে জয়ী
২০২১ চার জাতি টুর্নামেন্ট: বাংলাদেশ ২-১ গোলে জয়ী
২০২২ প্রীতি ম্যাচ: মালদ্বীপ ২-০ গোলে জয়ী।