মহাস্থান নিউজ: রেকর্ডের মালা গেঁথে দাপটের সঙ্গে ওয়ানডে সিরিজ জয়। এবার পালা টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের। প্রশ্ন হলো ওয়ানডে সিরিজের দাপট কি টি-টোয়েন্টি সিরিজেও অব্যাহত রাখতে পারবে বাংলাদেশ? সিরিজ জিততে হলে সেই দাপট ধরে রাখাটা অপরিহার্য। সাকিব আল হাসানের দল প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসীও। আইরিশদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আগেই টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে বাংলাওয়াশ করেছে সাকিবের দল। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে আয়ারল্যান্ড তো ডালভাত! তবে অনেক সময় পচা শামুকেও পা কাটে। সেই শঙ্কা দূর করতে হলে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে হবে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে। কিন্তু সংশয় হলো, আইরিশদের বিপক্ষে সাকিব যে সাকিব হয়ে জ্বলতেই পারেন না! ঘটনা সত্যিই। বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে সাকিব বিশ্ব ক্রিকেটেরই বড় এক তারকা। বর্তমানেও ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টির এক নম্বর অলরাউন্ডার তিনি। বড় বড় সব দলগুলোই সাকিবের ভয়ে তটস্থ থাকে। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, পুঁচকে আইরিশদের বিপক্ষে সাকিব কখনোই সাকিব হয়ে জ্বলতে পারেননি। মানে আইরিশদের নিজের সেরা রূপটা এখনো দেখাতে পারেননি বাংলাদেশের ক্রিকেটের পোস্টারবয়। এ পর্যন্ত আইরিশদের বিপক্ষে ১৩টি ওয়ানডে ও ৫টি টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। তার মধ্যে ১১টি ওয়ানডে ও ৪টি টি-টোয়েন্টিতে ফল হয়েছে। সেই ১৫ ম্যাচের একটিতেও ম্যাচসেরা হতে পারেননি সাকিব। অথচ ২৩০ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে তিনি ২৫ বার ম্যাচসেরা এবং ১১২ টি-টোয়েন্টির ক্যারিয়ারে ম্যাচসেরা হয়েছেন ৯ বার।
আইরিশদের বিপক্ষে বাংলাদেশ যে ১৩টি ওয়ানডেতে খেলেছেন, তার সবকটিতেই মাঠে নামা সাকিব ১০ ইনিংসে ব্যাট করে রান করেছেন মাত্র ২৮৫। বল হাতে সেই ১০ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন মাত্র ৩টি! ১০ ইনিংসে ব্যাট করে তিনটি হাফসেঞ্চুরি করেছেন। সর্বোচ্চ ইনিংসটি ৯৩ রানের। যে ইনিংসটি তিনি খেলেছেন সিলেটে সদ্য শেষ হওয়া ওয়ানডে সিরিজেরই প্রথম ম্যাচে। সেই বল হাতেও একটা উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। ফলে ম্যাচসেরার অন্যতম দাবিদার ছিলেন তিনিই। কিন্তু ম্যাচ অ্যাডজুকেটিভরা ম্যাচসেরা নির্বাচিত করেন ঐ ম্যাচেই অভিষেক হওয়া তাওহীদ হৃদয়কে, ৮৫ বলে ৯২ রানের ইনিংসের জন্য। আইরিশদের বিপক্ষে সাকিবের সেরা পারফরম্যান্স ঐ ম্যাচেই। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে বাকি সব ম্যাচেই তিনি থেকেছেন অন্যদের ছায়া হয়ে। টি-টোয়েন্টিতে যেমন ৫ ম্যাচের ৫টিতেই ব্যাট করে করেছেন মাত্র ৭৮ রান। তার ৫৭ রানই করেছেন এক ম্যাচে। বাকি ২১ রান করেছেন ৪ ম্যাচে। ৫ ম্যাচের ৪টিতে বোলিং করে উইকেট পেয়েছেন মাত্র ২টি। এসব পরিসংখ্যান সাকিবের নামের সঙ্গে একদমই যায় না। এই পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে বলা যায়, আইরিশরা বিশ্ব সেরা সাকিবকে ভালোভাবেই রুখে দিতে সক্ষম হয়েছে। তবে আইরিশরা নিশ্চয় এটাও জানে, সাকিবের মতো ক্রিকেটারদের পরিকল্পনা করে রুখে দেওয়া সম্ভব নয়। যেকোনো মুহূর্তে সব পরিকল্পনার জাল ছিঁড়ে সমহিমায় উদ্ভাসিত হওয়া ক্রিকেটার সাকিবের বড় গুণ। প্রশ্ন হলো নিজের সেই ভয়ঙ্কর রূপটা আইরিশদের কবে দেখাবেন সাকিব? আগের ব্যর্থতাকে পেছনে ফেলে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজকের প্রথম টি-টোয়েন্টি থেকেই কি শুরু হবে সাকিবের আইরিশদের দমনের পালা? সেটা হলে বাংলাদেশ দলের জন্য হবে বড় এক পুরস্কার।