ঝলমলে সুন্দর চুলের জন্য তরুণ-তরুণীরা। নিয়মিত গোসল, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, তেল ম্যাসাজ থেকে শুরু করে হেয়ার রিপেয়ারিং, বিভিন্ন প্যাকও হরদম ব্যবহার হচ্ছে। চুল পড়া কমাতে ও নতুন চুল গজাতে হরমোন ট্রিটমেন্টও করছেন অনেকেই। কিন্তু প্রতিদিনের গোসলের ভুলেই ভেস্তে যেতে পারে এত সব যত্ন।
শীতে ঠাণ্ডা পানির ভয়ে গোসলে অনীহা দেখা যায় অনেকের মধ্যে। কেউ কেউ দু-এক দিন বিরতি দিয়ে গোসল করেন। যাঁদের নিয়মিত গোসলের অভ্যাস তাঁরা গরম পানির আশ্রয় নেন। গরম পানিতে গোসল ত্বকের জন্য আরামদায়ক। উল্টো দিকে তা চুলের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। গোসলের পর দ্রুত চুল শুকাতে অনেকেই হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করেন। নিয়মিত হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করলে চুলের ক্ষতি হয়। তা কমবেশি অনেকেরই জানা। হেয়ার ড্রায়ারের শুষ্ক বাতাস চুলের ময়েশ্চারাইজার শুষে নেয়। চুলকে আরো শুষ্ক করে দেয়। চুলে থাকা প্রাকৃতিক তেল শুষে নেয়। চুলের কিউটিকল স্তর ভেঙে পড়ে। এতে চুল রুক্ষ হয়ে যায়। চুলে অতিরিক্ত গরম পানির ব্যবহারেও একই ঘটনা ঘটতে পারে। গরম পানির কারণে চুলের বন্ডিং দুর্বল হয়ে যায়। এতে চুলে ভঙ্গুরতা দেখা দেয়। গরম পানি চুলে লাগালে মাথার ত্বক খুব নরম হয়ে যায়। চুলের গোড়া নরম করে ফেলে। এ সময় চুলে শ্যাম্পু করলে এবং বেশি চাপ দিয়ে শ্যাম্পু করলে চুল পড়ার হার বেড়ে যেতে পারে। গরম পানিতে চুল ভেজালে চুল খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। এ সময় তোয়ালে দিয়ে একটু জোরে মুছতে গেলে চুল পড়া ও চুল ভেঙে যাওয়ার ভয় থাকে। গরম পানি ব্যবহারে চুল পড়ার হার বাড়ে, মাথায় খুশকি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে, চুলের ফলিকল বা কেশগ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে নতুন চুল না গজানোর শঙ্কা বৃদ্ধি পেতে পারে। খুব গরম পানি যেমন চুলের জন্য ক্ষতিকর আবার অতিরিক্ত শীতল পানিও অপকার বয়ে আনতে পারে। বেশি ঠাণ্ডা পানিতে মাথার ত্বক সংকুচিত হয়ে যায়। রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে চুলে সঠিক পুষ্টি পৌঁছায় না। বেশি ঠাণ্ডা পানিতে দ্রুত গোসল শেষ করার প্রবণতা থাকে সবার মধ্যে। এতে চুলের ময়লা ভালোভাবে পরিষ্কার হয় না। ফলে চুলে খুশকি জন্ম নেয়, জট ধরে।
কী করবেন
শীত হোক বা গরম সব সময়ই চুল ধোয়ার পানির তাপমাত্রা সঠিক হতে হবে। তবেই মিলবে সুফল। চেষ্টা করুন গোসলের পানির তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট রাখার। এমন তাপমাত্রার পানিতে প্রাকৃতিক নানা উপাদান মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে একদিকে যেমন আরাম মিলবে, তেমনি চুলেও নানা পুষ্টি যোগ হবে। গোসলের পর নরম তোয়ালে দিয়ে চুল কিছুক্ষণ জড়িয়ে রাখুন। এরপর চুল কিছুটা আর্দ্র থাকতেই ময়েশ্চারাইজার, নারকেল বা জলপাই তেল লাগিয়ে নিন। দেখবেন চুল থাকবে ঝলমলে ও মসৃণ।