মহাস্থান নিউজ:
নদীর দুই প্রান্তকে এক করতে পারে একটি সেতু। বিশ্বে ছোট বড় কয়েক হাজার সেতু আছে। এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করে সেতু। বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলাকে ঢাকার সঙ্গে সড়ক পথে সরাসরি যুক্ত করেছে পদ্মা সেতু।
রিকটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল পদ্মা সেতুর আয়ুষ্কাল একশো বছর। পদ্মা সেতু নির্মানের স্তুরে স্তুরে রয়েছে নানা স্থাপত্যশিল্পের ছোঁয়া। এর আগে দেশের সবচেয়ে বড় সেতু ছিল বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতু। যা দক্ষিণ এশিয়ার ৫ম দীর্ঘতম এবং বিশ্বের ৯২তম দীর্ঘ সেতু ছিল।
তবে বর্তমানে পদ্মা সেতু দেশের এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দৈর্ঘ্যে পদ্মা সেতুর অবস্থান প্রথম। অপরদিকে পৃথিবীর বৃহত্তম সড়ক সেতুর মধ্যে পদ্মা সেতুর অবস্থান ২৫তম এবং সবদিক বিবেচনায় এ সেতুটির অবস্থান বিশ্বে ১২২তম। এর আগে এ অবস্থানে ছিল সুইডেনের অল্যান্ড সেতু। বিশ্বের মধ্যে প্রথম সেতু হিসেবে পদ্মা সেতু স্টিল ও কংক্রিট দিয়ে তৈরি। পদ্মা সেতুর দৈঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার।
চলুন জেনে নেওয়া যাক বিশ্বের প্রথম সারিতে থাকা ১০ সেতু সম্পর্কে-
ডানইয়াং-কুনশান গ্র্যান্ড ব্রিজ, চীন
২০১০ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ২০১১ সালে তা উন্মুক্ত করা হয়। এখনো পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সেতুর তকমা ধরে রেখেছে চীনের এই সেতু। এর দৈর্ঘ্য ১৬৪ কিলোমিটার। দীর্ঘ এই সেতুটি তৈরিতে সময় লেগেছিল মাত্র ৪ বছর। এটি নির্মাণে ৮ দশমিক ৫ থেকে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়। বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম এই সেতুটি জায়গা করে নেয় গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে।
চাংহুয়া-কোয়াশিউং রেলসেতু, তাইওয়ান
পৃথিবীর দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতুর অবস্থান তাইওয়ানে। চাংহুয়া-কোয়াশিউং রেলসেতু। সড়কপথের পাশাপাশি তাইওয়ানের দ্রুতগতির রেলপথ এই সেতুর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ১৫৭ কিলোমিটার।
ক্যান্ডি গ্র্যান্ড ব্রিজ, চীন
পৃথিবীর তৃতীয় দীর্ঘতম সেতুটির দৈর্ঘ্য ১১৬ কিলোমিটার। চীনে অবস্থিত সেতুটি বেইজিং ও সাংহাইকে সংযুক্ত করেছে। ভূমিকম্পে অটলভাবে দাঁড়িয়ে থাকার সক্ষমতার লক্ষ্য নিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
তাইয়ানজিন গ্র্যান্ড সেতু, চীন
এই সেতুটিও চীনে অবস্থিত। এর দৈর্ঘ্য ১১৩ কিলোমিটার। চীনের লাংফাং ও কুইংজিয়েনের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে এই সেতু।
উইনান উইহি গ্র্যান্ড সেতু, চীন
পৃথিবীর পঞ্চম দীর্ঘতম সেতু এটি। এর দৈর্ঘ্য ৭৯ কিলোমিটার। ২০০৮ সালে যখন এটি নির্মিত হয়। বিশ্বের দীর্ঘতম সেতুর তালিকায় পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে এই সেতুটি।
হংকং-ঝুহাই-ম্যাকাও সেতু, চীন
২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই সেতুটি। এর দৈর্ঘ্য ৫৫ কিলোমিটার। হংকং আর চীন- দুইটি দেশকে যুক্ত করার কারণে এই সেতুটি নিয়ে বহু আলোচনা হয়। ৫৫ কিলোমিটারের এই সেতুটি বিশ্বের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতুর পাশাপাশি সমুদ্র টানেলও।
ব্যাং না এক্সপ্রেসওয়ে, থাইল্যান্ড
বিশ্বের দীর্ঘতম সেতুর তালিকায় সপ্তম স্থানে থাকা এই সেতুটি থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় সেতু। এর দৈর্ঘ্য ৫৪ কিলোমিটার। ২০০০ সালে নির্মিত হয় এই সেতুটি।
বেইজিং গ্র্যান্ড সেতু, চীন
চীনের এই সেতুটি মূলত রেলপথ। এর দৈর্ঘ্য ৪৮ কিলোমিটার। ২০১০ সালে নির্মাণ কাজ শেষ করার পর ২০১১ সালে এতে যান চলাচল শুরু হয়। হাই-স্পিড বুলেট ট্রেন চলাচল করে সেতুটিতে।
লেক পন্টচারট্রেইন কজওয়ে, যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের এই সেতুটির দৈর্ঘ্য ৩৮ কিলোমিটার। প্রথম এই সেতুটি নির্মিত হয় ১৯৫৬ সালে। যান চলাচল বাড়লে দ্বিতীয় সেতু যুক্ত করা হয়। এরপর ১৯৬৯ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
উহান মেট্রো সেতু, চীন
বিশ্বের দীর্ঘতম সেতুর তালিকায় দশম স্থানে আছে উহান মেট্রো সেতু। এই সেতুটি চালু হয় ১৯৯৫ সালে। চীনের উহান শহরে অবস্থিত এই সেতুর দৈর্ঘ্য ৩৭ কিলোমিটার।