ষ্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়া ঠনঠনিয়া ঢাকা কোচ কাউন্টার গুলোতে যাত্রীদের কাছে অতিরিক্ত টাকা নেয়ায় জরিমানা করে তোপের মুখে পড়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরিস্থিতি জটিল করে এক পর্যায়ে সড়ক অবরোধ করেন বাস কাউন্টারের লোকজন।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের ঠনঠনিয়া ঢাকা বাস টার্মিনালে এ ঘটনা ঘটে। দুপুর ১ টার দিকে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে নেয় বাস মালিক-শ্রমিক নেতারা।
অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগে এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসন। আদালত সূত্র জানায়, বগুড়া থেকে ঢাকা রুটে নন এসি বাসের ভাড়া নির্ধারিত মূল্য ৪৫০ টাকা। কিন্তু অভিযোগ আসে বাস কাউন্টার থেকে ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৫৫০ টাকা। এ ঘটনায় শ্যামলী পরিবহণের ম্যানেজার কামালকে ৬ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। এ ছাড়াও শাহ ফতেহ আলী ও একতা পরিবহনের টিকিট বিক্রেতারা অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেন।
কিন্তু কাউন্টার কর্তৃপক্ষরা ভাড়া নেয়ার বিষয়টি তাদের বাস মালিক-শ্রমিক সংগঠনের সিদ্ধান্ত বলে জানান। পরে এক পর্যায়ে টার্মিনালের লোকজন বাস বন্ধ করে দেয়। পাশাপাশি উত্তেজিত বাস শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের ম্যানেজার আজাদ জানান, ১৫ মে পর্যন্ত বগুড়া থেকে ঢাকার বাস ভাড়া ৫৫০ টাকা করে নেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাস মালিক-শ্রমিক সংগঠন। তবে এসি গাড়িতে ভাড়া বেশি নেয়া হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, ঢাকা থেকে আমাদের গাড়িগুলো ফাঁকা আসছে। এখানে আমাদের লোকসান হচ্ছে।
জরিমানার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খালিদ বিন মনসুর। তিনি বলেন, অতিরিক্ত মূল্যের টিকিট পাওয়ায় শ্যামলী পরিবহনকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আর সব কাউন্টারকে সরকার নির্ধারিত মূল্য ৪৫০ টাকায় টিকিট বিক্রি করতে বলা হয়েছে। কারণ সরকারের অনুমতি ব্যতিরেকে বাস সংগঠন এককভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
নির্বাহী ম্যাজেস্ট্রেটের এমন নির্দেশনার পরে পৌণে ১২ টার দিকে অবরোধ তুলে নেয়া হয়। কিন্তু পরিবহন নেতা আমিনুল ইসলাম কাউন্টার আসলে ১২ টার দিকে শ্রমিকরা আবার উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাদের দাবি, জরিমানা অর্থ আদালতকে ফেরত দিতে হবে। এমন দাবিতে তারা আবার সড়ক অবরোধ করে দেন।
এ সময় বগুড়া বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত আসার আগে পরিবহন সংগঠনের কাউকে জানানো হয়নি। তারা এসে অযাচিতভাবে জরিমানা করেছেন। এই জরিমানার টাকা ফেরত দিতে হবে।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, একটা রায় ঘোষণা হলে সেটার অর্থ ফেরত দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে রায়ে কারো কোনো আপত্তি থাকলে সেই বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) মহোদয় বরাবর আপিল করতে পারবে। বাস কাউন্টার পক্ষকে আমি সেই কথাও বলেছি। তারা এ বিষয়টি মেনে নিয়ে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করেছেন।