প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার এক দিন পরই নওগাঁ-২ (পত্নীতলা ও ধামইরহাট) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক মারা যাওয়ায় ওই আসটির ভোট স্থগিত হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নওগাঁ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক, যার প্রতীক ছিল ঈগল, ভোর ৫টায় ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি (আমিনুল হক) একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মৃত্যুবরণ করলে রিটার্নিং কর্মকর্তা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন স্থগিত করবেন। ওই আসনে পরে নির্বাচন হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান বৈধ প্রার্থীরা থাকবেন। তাদের নতুন করে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে না। পুনরায় তপশিল হলে নতুন করে অন্যরা মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। এ আসনে কবে ভোট হবে, তার তপশিল নিয়ে কমিশন পরে সিদ্ধান্ত দেবে।
এর আগে শুক্রবার ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
আমিনুল হক ২০০৬ সালে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক। এছাড়া তিনি ১৯৮৬ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত পত্নীতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিকবার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আমিনুল হকের ছেলে আছিফুল হক জানান, মামলার শুনানিতে অংশ নিতে গত সোমবার ঢাকায় যান আমিনুল হক। ঢাকায় যাওয়ার পর থেকেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার রাতে তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোরে তার মৃত্যু হয়। তিনি ডায়াবেটিসজনিত সমস্যা, হৃদরোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন।
নওগাঁ-২ আসনে আমিনুল হক ছাড়াও তিনজন প্রার্থী আছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি শহীদুজ্জামান সরকার, জাতীয় পার্টির তোফাজ্জল হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুল ইসলাম।
নওগাঁ-২ আসনের ভোট স্থগিত হওয়ায় আগামী ৭ জানুয়ারি ভোট হবে ২৯৯ আসনে। পরে নওগাঁ-২ আসনের জন্য নতুন করে তপশিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। নিয়ম অনুযায়ী, এখন যারা বৈধ প্রার্থী আছেন, তাদের আর মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে না। তাদের সঙ্গে নতুন প্রার্থীও যোগ হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময়ও এক প্রার্থীর মৃত্যুতে ২৯৯ আসনে ভোট হয়েছিল। পরে গাইবান্ধা-৩ আসনে ভোট হয় ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি। এর আগে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচনেও ভোট হয় ২৯৯ আসনে। গণতন্ত্রী পার্টির প্রার্থী নুরুল ইসলামের মৃত্যুর কারণে নোয়াখালী-১ আসনে নির্বাচন ২৯ ডিসেম্বর হয়নি। পরে ওই আসনে নির্বাচন হয়।