মহাস্থান স্পোর্টস:
ইউরোপ ছেড়ে আমেরিকান ক্লাব ফুটবলে রীতিমতো ঝড় তুলছেন লিওনেল মেসি। ফ্লোরিডার ক্লাবটিতে তিনি পা রাখার পর থেকেই বিপ্লবের সৃষ্টি হয়েছে বলা চলে। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তখন অনুসারির সংখ্যায় নামিদামি অনেক ক্লাবকে ছাড়িয়ে যায় ইন্টার মায়ামি। দর্শক চাহিদার তুঙ্গে থাকায় এরপর সরাসরি ম্যাচের ভিউ’র (অনলাইনে) রেকর্ড এবং উচ্চদামেও টিকিট কেনা বাদ যায়নি। এবার আর্জেন্টাইন অধিনায়কের মায়ামির জার্সি বিশ্বরেকর্ড-ই গড়ে ফেলেছে।
জুলাই মাসের শুরু থেকে মায়ামির সঙ্গে ২ বছর ৬ মাসের চুক্তি শুরু হয়েছে মেসির। তার মানে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি মায়ামির হয়ে খেলবেন। তবে এই মেয়াদ শেষে দুই পক্ষের সম্মতিতে আরও এক বছরের জন্য চুক্তি নবায়নের সুযোগ রয়েছে। এরপর এখন পর্যন্ত ক্লাবটির গোলাপী জার্সিতে তিন ম্যাচে মাঠে নেমেছেন মেসি। যেখানে পাঁচটি গোলের পাশাপাশি অবদান রেখেছেন সতীর্থের এক গোলেও।
মেসি ধারাবাহিক ফর্ম মায়ামিকে লিগস কাপের শেষ ষোলোতে তুলে দিয়েছে। এ তো গেলো মাঠের পারফরম্যান্স। মাঠের বাইরেও চলছে মেসি-ম্যানিয়া। তিনি জার্সি বিক্রির সব রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছেন। টম ব্র্যাডি, লেব্রন জেমস এবং ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে পেছনে ফেলে লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামির ১০ নম্বর জার্সি এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিক্রিত জার্সি। তাও এই রেকর্ড হয়েছে মাত্র ২৪ ঘণ্টায়। এমএলএস-এর ই-কমার্স সহযোগি ফ্যানাটিকস এই তথ্য জানিয়েছে।
এতদিন পর্যন্ত ফুটবলে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত জার্সির রেকর্ড ছিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর। ২০২১ সালে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফিরে ওই কীর্তি গড়েছিলেন। কিন্তু ইন্টার মায়ামিতে গিয়ে সে রেকর্ড ভাঙতে লিও সময় নিলেন মাত্র ২৪ ঘণ্টা! এছাড়া আমেরিকায় এর আগে সবচেয়ে বেশি জার্সি বিক্রির রেকর্ড ছিল টম ব্র্যাডির। ২০২০ সালে ট্যাম্পা-বে বাকানির্সে যোগ দেওয়ার পর জার্সি মার্কেট ওলট-পালট হয়ে গিয়েছিল। যদিও মার্কিন কিংবদন্তি বাস্কেটবল খেলোয়াড় লেব্রন জেমস ২০১৮ সালে লেকার্সে নাম লিখিয়ে দুবছর এই রেকর্ড দখলে রেখেছিলেন।
৬ আগস্ট প্রথমবারের মতো নিজেদের ডিআরভি পিএনকে স্টেডিয়ামের বাইরে খেলতে নামবেন মেসিরা। এদিন টয়োটা স্টেডিয়ামে শেষ ষোলোর ম্যাচে এফসি ডালাসের মুখোমুখি হবে মায়ামি। অথচ ২০ হাজার ৫০০ দর্শক ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ভেন্যুর টিকিট মাত্র ১০ মিনিটেই শেষ হয়ে যায়। একইসঙ্গে এই মুহূর্তে মায়ামির ১০ নম্বর জার্সিও পরিণত হয়েছে সোনার হরিণে। অফিশিয়াল শপগুলোতে তা স্টক আউট, বহু পয়সা খরচ করেও জার্সির ছোঁয়া পাওয়া দুঃসাধ্য। জার্মান ভিত্তিক স্পোর্টস ব্র্যান্ড অ্যাডিডাস স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, দুই মাসের আগে নতুন করে জার্সি নিয়ে আসা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
মায়ামির সহ-মালিক জর্জ মাস সংবাদমাধ্যম সিএনবিসিকে বলেছেন, গত ১৮ জুলাই মেসির জার্সি স্টক আউট হয়ে যায়। অ্যাডিডাসের উত্তর আমেরিকা অঞ্চলের সভাপতি রুপার্ট ক্যাম্পবেল জানান, শুরুর মিনিটেই সব জার্সি বিক্রি হয়ে গেছে। সে কারণে মায়ামি সেন্টারে পপ-আপ স্টোর খুলেছি।
এমন চিত্র আঁচ পেয়ে এর আগে মায়ামির আরেক সহ-মালিক ডেভিড বেকহাম বলেছিলেন, ‘আমেরিকান সকারের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল। গত ১০-১৫ বছর ধরে এর প্রসার দেখতে পাচ্ছি। তবে মেসির মতো ফুটবল তারকাকে আনা কেবল মায়ামির জন্যই নয়, এমএলএসের জন্য অনেক বড় অর্জন। কেবল লাতিন আমেরিকানরাই এখানে নজর রাখছে না, সারাবিশ্বের দৃষ্টিও এখানেই।’