দক্ষিণপূর্ব আফ্রিকার দেশ মালাওয়ের এক নাগরিককে দেশের ইতিহাসে সলিড কোকেনের সবচেয়ে বড় চালানসহ আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (ডিএনসি) ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (উত্তর)।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ডিএনসির উত্তর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন) তানভীর মমতাজ।
এর আগে বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে ৮ কেজি ৩০০ গ্রাম কোকেনসহ ওই নারীকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে আটক করা হয়। জব্দ করা মাদকের মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা।
ডিএনসি জানায়, কোকেনের এই চালানটি আফ্রিকার দেশ মালাও বা ইথিওপিয়া থেকে বাংলাদেশে এসেছে। চালানটি পাচার করার জন্য বাংলাদেশকে ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল।
তানভীর মমতাজ বলেন, বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে কোকেনের একটি বৃহৎ চালান আফ্রিকা থেকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে একজন আফ্রিকান নাগরিকের মাধ্যমে ঢাকায় আসবে–এমন তথ্য পেয়ে আমরা নজরদারি বাড়াই।
তিনি আরও বলেন, ‘পরে বুধবার এপিবিএনকে সঙ্গে নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একটি টিম বিমানবন্দরের ৮ নম্বর টার্মিনালের বোর্ডিং ব্রিজ এলাকায় অবস্থান করে। ফ্লাইটটি থেকে নামা সব বিদেশি যাত্রীকে আমরা ফলো করি।’
এর মধ্যে নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকো নামে এক বিদেশি নারীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন লাগেজে অবৈধ মাদক কোকেন রয়েছে। পরে লাগেজের ভেতরে বিশেষভাবে রক্ষিত ৮ কেজি ৩০০ গ্রাম কোকেন জব্দ করা হয়, যোগ করেন তিনি।
তানভীর বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সোকো জানায়, ২০২৩ সালে তিনি বাংলাদেশে একবার এসেছিলেন। গার্মেন্টস ব্যবসার কথা বলে এসেছিলেন তিনি। এবারও তিনি বাংলাদেশের একটি গার্মেন্টসের আমন্ত্রণপত্র নিয়ে আসেন। অন অ্যারাইভাল ভিসা নেয়ার জন্য তিনি তার পরিচয় লুকিয়ে গার্মেন্টস ব্যবসার নাম করে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। সোকো পেশায় একজন নার্স। তিনি মূলত কোকেনের এই চালানের বহনকারী। বাংলাদেশে তিনি আরেক বিদেশি নাগরিকের কাছে এই চালান পৌঁছে দিয়ে নিজ দেশে চলে যাওয়ার কথা ছিল।
বাংলাদেশে সোকো কার কাছে কোকেন হস্তান্তর করতেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত করছি। তবে বাংলাদেশে অবস্থানরত কয়েকজন বিদেশি নাগরিকের কাছে এই কোকেন যাওয়ার কথা ছিল। আমরা একজন বিদেশিকে সন্দেহ করছি। তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না।