দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বগুড়া-৪ আসনে রেজাউল করিম তানসেন এমপির মুখোমুখি হলেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম। তিনি এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ডাব প্রতীক পেয়েছেন। এরআগে ২০২৩ সালের ১ ফেব্রæয়ারি এই আসনের উপ-নির্বাচনে একতারা মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন হিরো আলম। ভোটযুদ্ধে রেকর্ড গড়েও মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর। জাসদের রেজাউল করিম তানসেন মশাল মার্কায় ২০ হাজার ৪০৫ ভোট পেয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম একতারা মার্কায় পেয়েছিলেন ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট। বর্তমান সাংসদ তানসেন এবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধিন ১৪ দলীয় জোট মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে প্রচারণায় সরব রয়েছেন। আশরাফুল হোসেন হিরো আলম বাংলাদেশ কংগ্রেস জোট মনোনীত ডাব প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ‘ডাব প্রতীক’ নিতে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎ পাননি হিরো আলম। তিনি জানান, জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা অফিসে ছিলেন না। মৌখিকভাবে ভোটের প্রচারণার অনুমতি দিয়েছেন কর্মকর্তারা। তার সমর্থকরা ভোটের প্রচারণা শুরু করেছেন। আলোচিত এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর আনুষ্ঠানিকভাবে আজ শুক্রবার বগুড়া-৪ (নন্দীগ্রাম-কাহালু) আসনের কাহালু উপজেলার মুরইল বাজার থেকে ভোটের প্রচারণা শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।
নির্বাচনে অংশ নিতে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে গত ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেন হিরো আলম। যথাযথভাবে ফরম পূরণ না করায় মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইয়ে গত ৩ ডিসেম্বর হিরো আলমের প্রার্থিতা বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করেন হিরো আলম। গত ১০ ডিসেম্বর ইসির আপিল শুনানিতে তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রার্থীদের হাতে প্রতীক তুলে দেন বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। তবে ওইদিন হিরো আলম বা তার কোনো প্রতিনিধি প্রতীক নিতে যাননি। তিনদিন পর ডাব প্রতীক নিতে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান হিরো আলম। এরপর বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। হিরো আলম বলেন, উৎসবমূখর সুষ্ঠু নির্বাচন হবে ভেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। প্রার্থী যারাই হোক, তানসেন (নৌকা) আর আমার (ডাব) মার্কার মধ্যে লড়াই হবে। প্রচারণার সময় এবং ভোট কেন্দ্রে তার ওপর বা সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা যেন না ঘটে, সেজন্য পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছি। পুলিশ সুপার নিরাপত্তা দেবেন বলে আশ^াস দিয়েছেন।
বগুড়া-৪ আসনের প্রার্থীরা হলেন- জাসদের প্রার্থী বর্তমান সাংসদ একেএম রেজাউল করিম তানসেন (নৌকা), বাংলাদেশ কংগ্রেস জোট প্রার্থী আশরাফুল হোসেন হিরো আলম (ডাব), জাতীয় পার্টির শাহীন মোস্তফা কামাল ফারুক (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির চারবারের সাবেক সাংসদ ডা. জিয়াউল হক মোল্লা (ঈগল) এবং মোশফিকুর রহমান কাজল (ট্রাক)।
উল্লেখ্য, বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনের উপ-নির্বাচনে একতারা মার্কায় একসঙ্গে দুটি আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন হিরো আলম। তিনি ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে বগুড়া-৪ আসনে পরাজিত হন। বগুড়া-৬ সদর আসনে একতারা মার্কায় পেয়েছিলেন ৪ হাজার ৫৪০ ভোট। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিংহ মার্কা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে প্রথম আলোচনায় আসেন হিরো আলম। তিনি মাত্র ৬৩৮ ভোট পেয়েছিলেন। সেবার নির্বাচনের দিন কারচুপি ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। সবশেষ ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে অংশ নেন এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর। একতারা মার্কায় পেয়েছিলেন ৫ হাজার ৬০৯ ভোট।