টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সবাইকে সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে বলেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মত বিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
২৯ নভেম্বর ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের দায়িত্ব পাওয়ার পর এই প্রথম তিনি বিভাগটিতে যান। এ সময় সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
বৈঠকে পলক বলেন, ‘আমাদের সামনে আগামী ৩৪ দিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ে আপনারা সবাই সতর্কতার সঙ্গে আপনাদের দায়িত্ব পালন করবেন। আমাদের ডাক যদি চালু না থাকে তাহলে আমাদের যে লজিস্টিকস, আমাদের সব পণ্য আনা নেওয়া করা সেটাই কিন্তু একটা দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে যাবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখছি হরতাল-অবরোধের নামে একটা রাজনৈতিক দল, একটা রাজনৈতিক গোষ্ঠী দেশি-বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করে প্রতিদিন নিরীহ মানুষের ওপরে আক্রমণ করছে। অত্যন্ত নিরীহ একজন ট্রাক ড্রাইভার মারা গেছে। অসংখ্য গাড়ি পোড়াচ্ছে, রাস্তায় অবরোধ করছে।’
‘আমাদের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে খুব সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ডাক বিভাগকে চলমান রাখতে হবে। বিটিআরসিকে দায়িত্ব পালন করতে হবে অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে, যাতে আমাদের টেলিকমিউনকেশনে কোনো রকম বাধা না হয়’ বলেন পলক।
নতুন এই দায়িত্ব পাওয়ায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
সভায় তিনি স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, যখন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের দায়িত্ব দেওয়ার সুখবরটি দিলেন, তখন নিজেকে আমি ধরে রাখতে পারিনি, আমি ভীষণ আবেগতাড়িত হয়ে যাই। কারণ আবার বাবা একজন টেলিকম অপারেটর ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার বাবা ফয়েজউদ্দিন আহমেদ গ্রামের ছেলে। তিনি চলনবিলের প্রত্যন্ত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নাটোর থেকে গিয়ে বগুড়া আজিজুল হক কলেজে লেখাপড়া করতেন। খুবই অল্প বয়সে তিনি এইচএসসি পাস করেন, সেই সময়ে তিনি রাজশাহীতে একটি ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হন।
পলক বলেন, যেহেতু তিনি খুব বেশি ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান ছিলেন না, যে কারণে টেলিফোন এক্সচেঞ্জের অপারেটর পদে চাকরি নিয়েছিলেন। তিনি দিনাজপুরে গিয়ে জয়েন করেন। এ কারণে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের লেখাপড়া শেষ করা হয়নি তার। তারপর বদলি হয়ে বগুড়ায় আসেন এবং আমার মায়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এরপর সান্তাহার, নাটোর, চুয়াডাঙ্গা এক্সচেঞ্জেও তিনি টেলিফোন অপারেটর পদে চাকরি করেন।
১৯৫৭ সালে তার বাবার চাকরি পাওয়ার কথা জানিয়ে পলক বলেন, আমি সকালে মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আব্বার বেতন কত ছিল? তিনি বললেন ১২৫ টাকা! এসব কারণে টেলিকম খাতের সঙ্গে আমার একটা আবেগের সম্পর্ক রয়েছে।
পলক বলেন, যেদিন দায়িত্বের খবরটি পাই, মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলাম। মা মনে করেছিলেন, কোনো দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। আমি আসলে আনন্দটা প্রকাশ করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলাম না।