ফাবিয়া হাসান মনিষা, মো. রহুল আমিন। ছবি : সংগৃহীত
নানা ধরনের রেস্টুরেন্টের মুখরোচক খাবার এবং দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণের ভিডিও কনটেন্ট নির্মাণ করে জনপ্রিয় হলেও এবার ভিন্ন কারণে আলোচনায় এসেছেন ‘ফুড আপ্পি’ ওরফে ফাবিয়া হাসান মনিষা।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে নিজের সাবেক স্বামীকে নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ঝেড়েছেন তিনি। ঘটনার সূত্রপাত কিছুদিন আগে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয় একটি লাইভ টকশোতে এসে মনিষা তার জীবনের বাস্তব ঘটনা তুলে ধরেন। সেখানে উঠে আসে তার বিগত জীবনের কথা, সাবেক স্বামীর কথা। পরবর্তীতে ওই একই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে তার সাবেক স্বামীও আসেন। এ সময় মো. রুহুল আমিন নামের ওই ব্যক্তি মনিষার বিরুদ্ধে পাল্টা বেশকিছু অভিযোগ তোলেন। মনিষার দায়ের করা যৌতুক মামলার কথা বলতে গিয়ে এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
এরই ধারাবাহিকতায়, ‘ফুড আপ্পি’ ওরফে ফাবিয়া হাসান মনিষা তার স্বামীর বক্তব্যের বিরোধিতা করে লাইভে আসেন। ভিডিওতে রাগান্বিত কণ্ঠে তিনি সাবেক স্বামীকে বেশকিছু অভিযোগে অভিযুক্ত করেন এবং ক্ষোভ ঝাড়েন।
লাইভ ভিডিওতে তিনি বলেন, কোনোদিন ভাবছ? এ রকমটা হবে? কোনোদিন ভাবছ? তোমার এক্স ওয়াইফ ফাবিয়া হাসান মনিষা মাসে কোনোদিন ১০ লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবে? কোনোদিন ভাবছিলা? যে ১০ লাখ ১১ লাখ টাকার জন্য তুমি আমাকে ডিভোর্স দিছ সেই ১০ লাখ ১১ লাখ টাকা আমি মাসে ইনকাম করতে পারি। এই টাকা আমি অনলাইনে বসে, ঘরে বসে আমি কামাইতে পারি সেই যোগ্যতাটা আমার হইছে।
তিনি বলেন, আর যারা ভাবতেছেন এই বেচারা যদি সাত বছর বিয়ে না করে বাচ্চার জন্য অপেক্ষা করে থাকতে পারে তাহলে আমি কেন আগের জামাই এবং বাচ্চাকে ভালোবাসার পরেও বিয়ে করে ফেললাম? যদি আমি বিয়ে না করতাম, তাহলে আপনাদের সমাজ আমাকে কী কী ভাষা এবং কী কী ওয়ার্ড বলে আখ্যায়িত করতে পারে তা আমার থেকে আপনারা ভালো জানেন। এত বছর পরেও, ডিভোর্সের সাত বছর পরেও ওই স্মৃতিগুলো যখন আমার মাথায় আসে তখন আমি স্টেবল থাকি না। আমি সহ্য করতে পারি না। শুধু তারাই এটা বুঝতে পারবে যারা এই সিচুয়েশনের মধ্য দিয়ে গেছে।
প্রাক্তন স্বামীর সংসার নিয়ে তিনি বলেন, সে সংসার টেকানোর জন্য বিন্দুমাত্র চেষ্টা করছে- এটা আমি মইরা গেলেও স্বীকার করব না। জীবনেও সে চেষ্টা করে নাই। চেষ্টা তো অনেক দূরের কথা- সে শুরু থেকেই বিচ্ছেদের পেছনে ছিল।
তিনি আরও বলেন, যে পরিমাণ টাকা আমি আপনার কাছ থেকে পাই সে পরিমাণ টাকা এখন আমি নিজেই কামাইতে পারি। ওই টাকার আর এখন আমার প্রয়োজন নেই। আপনার প্রয়োজন যেমন আমার জীবন থেকে শেষ হয়ে গেছে তেমনি আপনার টাকার প্রয়োজনও জীবন থেকে বহু আগে শেষ হয়ে গেছে।
দর্শকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা যারা মোহাম্মদ রুহুল আমিনের কান্না দেখে ভেঙে পড়তেছেন (ভাষায় প্রকাশের অযোগ্য)… একজনকে বিয়ে করে তার সংসারে থেকে একটা বাচ্চা পয়দা করে সাকসেসফুলি থাকাটাই হচ্ছে একজন সাকসেসফুল মানুষের কাজ। যেটা আপনি করতে পারেন নাই সাত বছর সেটা আমি করে দেখাইছি। সাকসেসফুল আপনি না আমি।
তিনি বলেন, আর আপনারা যেসব মানুষরা চিন্তা করতেছেন যে, আমি কেন বিয়ে করছি, কেন বিয়ে করব না? সে আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছে ২০১৬ সালে। আমি বিয়ে করছি ২০১৯ সালে। মাঝখানে তিনটা বছর চলে গেছে। তিন বছরের ভেতর দুইটা বছর আমি তার পেছনে কুত্তার (কুকুরের) মতো ঘুরছি। আমি কি সারাজীবন দাসির মতন তার পেছনে ঘুরে বেড়াব? আমার ফ্যামিলি নাই? আমার সোসাইটি নাই। আমি কি ফ্যামিলি থেকে আলাদা? আমি কি বিয়ে না করে থাকতে পারব? আপনারা কি আমাকে কোনোদিন থাকতে দিবেন?
আমি আগেও বলছি, এখনো বলি সারা জীবন বলব- এই সমাজ, এই সমাজে একজন বিধবাকে এক্সেপ্ট করে নিতে পারে, একজন আনম্যারিড মেয়েকে একসেপ্ট করে নিতে পারে কিন্তু কোনোদিন একজন ডিভোর্সিকে একসেপ্ট করে নিবে না, আপনি করবেন না, আমিও করব না হয়তো আরও দশজনও করবে না।
সাবেক স্বামীর প্রতি অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, তুমি আমারে অশিক্ষিত বানায় রাখতে চাইছিলা, তুমি আমাকে টাকা পয়সা ইনকাম করতে দিতে চাও নাই, আমাকে তুমি এসএসসি ইন্টার পাশ করায় রাখতে চাইছ। তুমি চাও নাই আমি কোনোদিন ক্যারিয়ার বিল্ড আপ করি।
সাবেক স্বামী হয়েও কেন মনিষাকে রুহুল ‘ফুড আপ্পি’ সম্বোধন করেন সে বিষয়ে মনিষা বলেন, তুমি আমাকে কীভাবে ফুড আপ্পি ডাকো তোমার লজ্জা করে না? ফাবিয়া হাসান মনিষা বলতে পারো না? আসলে আমার নাম ধরে ডাকারও তো তোমার কোনো যোগ্যতা নাই।