“এটা কোনো বিষয় নয়; এর আগেও বাতিল করেছিল। হাই কোর্ট থেকে রায় এনেছি, এবারও তাই করব।”
রাজনৈতিক দলের মনোনীত হয়েও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা এবং যথাযথভাবে পূরণ না করায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
এদিন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক বগুড়ার-১, ২, ৩ ও ৪ আসনের প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাই-বাছাই করা হয়।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসন থেকে বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির মনোনয়নে প্রার্থী হন হিরো আলম।
তবে যাচাই-বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা দেখেন, হিরো আলম যথাযথভাবে মনোনয়নপত্র পূরণ করেননি।
এজন্য তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয় বলে জানান জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “দলীয় প্রার্থী হলেও হিরো আলম স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র পূরণ করেন। রাজনৈতিক দলের স্থানে হিরো আলম লিখেছেন ‘প্রযোজ্য নহে’। দলীয় মনোনয়নে মূল কপি তিনি জমা দেননি। ফটোকপি দিয়েছেন। এটা একটি বিষয়।”
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা আরও বলেন, “স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে আপনার ভোটার তালিকার এক শতাংশ সমর্থনের তথ্য জমা দিতে হবে। উনি সেটিও করেননি। এখানেও আইনের ব্যত্যয় হয়েছে।
“তারপর হিরো আলম তার হলফনামার সঙ্গে সম্পদের আয়-ব্যয় বিবরণী জমা দেননি। এ ছাড়া তার হলফনামা নোটারি পাবলিক করা থাকলেও সেখানে স্বাক্ষর করেননি হিরো আলম।”
এ সময় স্বাক্ষর করার সুযোগ চেয়ে হিরো আলম বলেন, “সম্পদ বিবরণী আছে। সেটা দেওয়া ছিল। উকিল জমা দিতে ভুল করেছে। আর হলফনামায় এখন স্বাক্ষর করে দিচ্ছি।”
কিন্তু সভা কক্ষে উপস্থিত অন্য প্রার্থীরা এটাতে আপত্তি জানান।
তারা বলেন, মনোনয়নপত্রে হলফনামা দেওয়ার বিষয়টি একটি আইনগত প্রক্রিয়া। কারণ হলফনামায় লেখার পর একজন সেখানে শনাক্ত করতে হবে। এরপর একজন ম্যাজিস্ট্রেট বা নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে সেটি ভ্যারিফাই করতে হয়। উনি সেটি অনুসরণ করেননি। এখন হলফনামায় স্বাক্ষর করা সম্ভব না।
এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, “হিরো আলমের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। তবে উনি চাইলে আমার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে সোমবার বিকাল ৪টার পর আমাদের রায়ের কপি নিয়ে তিনি নির্বাচন কমিশনে আপিল করার সুযোগ পাবেন।”
হিরো আলম তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, “এটা কোনো বিষয় নয়; এর আগেও বাতিল করেছিল। হাই কোর্ট থেকে রায় এনেছি, এবারও তাই করব।”
এর আগে চলতি বছর বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন হিরো আলম। কিন্তু সেখানেও যাচাই-বাছাইয়ের সময় তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়।
ওই বাতিলের কারণ ছিল হিরো আলমের এক শতাংশ ভোটার তালিকায় গরমিল। পরে হাই কোর্ট থেকে প্রার্থিতার বৈধতা এনে নির্বাচন করেন।
তবে দুটি আসনেই পরাজয় হয় হিরো আলমের। পরবর্তীতে চলতি বছরের ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনে উপ-নির্বাচনেও অংশ নিয়েও পরাজিত হন তিনি। হারান জামানত।
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন হিরো আলম। যদিও পরে ‘অনিয়মের অভিযোগ তুলে’ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।