বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। পূর্ব নির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ যাত্রা শুরু করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজার আইকনিক রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার গোলাম রব্বানী।
তিনি বলেন, প্রথম ট্রেন দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে কক্সবাজার আইকনিক রেল স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এতে যাত্রী ছিল ১ হাজার ৩০ জন।
ট্রেনটির আজ রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। ফিরতি ট্রেন কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন ছাড়বে রাত সাড়ে ১০টায়।
ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচলে যাত্রীবাহী ট্রেনের গতিসীমা ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। কয়েক দফা পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের সফল কার্যক্রম শেষে গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার রেল সংযোগ উদ্বোধনের সময় ডিসেম্বর থেকে দুটি ট্রেন চালুর নির্দেশ দেন।
ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৯৫ টাকা। এসি চেয়ারের ভাড়া ১ হাজার ৩২৫ টাকা, এসি সিটের ভাড়া ১ হাজার ৫৯০ টাকা এবং এসি বার্থের ভাড়া (ঘুমিয়ে যাওয়ার আসন) ২ হাজার ৩৮০ টাকা। অপর দিকে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া ২০৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ৩৮৬ টাকা, এসি সিটের ৪৬৬ এবং এসি বার্থের ভাড়া ৬৯৬ টাকা।
প্রথম দিনের রেলের যাত্রী হতে অনেক মানুষ স্টেশনে খুব ভোরে উপস্থিত হন। সকালে স্টেশন ও স্টেশনের বাইরে বিপুলসংখ্যক যাত্রী দেখা যায়। তাদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।
বেশ কয়েকজন যাত্রী জানান, তারা ভোর পাঁচটার দিকে স্টেশন এলাকায় আসেন। তার পর থেকে ট্রেনে ওঠার জন্য অপেক্ষা করেন। আগামী ১০ তারিখ পর্যন্ত টিকিট বুকিং থাকায় টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন অনেক মানুষ।
রব্বানী নামের এক যাত্রী বলেন, দুপুর ১২টা ৩০মিনিটে কক্সবাজার আইকনিক রেল স্টেশন থেকে কক্সবাজার এক্সপ্রেসে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ১ হাজার ৩০ জন যাত্রী ছিল ট্রেনে।
খোরশেদ আলম নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, অনলাইনে টিকিটের জন্য আবেদন করলেও টিকিট বুকিং দেখানো হয়েছে। যার কারণে নিতে পারেনি। তবে প্রথম রেল ছুটার দৃশ্যটা দেখার জন্য সকাল সকাল চলে আসছি।
সেজান নামের এক যাত্রী বলেন, প্রথম যাত্রার যাত্রী হতে সিলেট থেকে কক্সবাজার এসেছি। রাত থেকে ঘুম হয়নি। কখন সকাল হবে সেই অপেক্ষায় ছিলাম। ট্রেনে উঠতে পেরে এখন একটু স্বস্তি পেয়েছি।
ফায়সাল নামের আরেক যাত্রী বলেন, কক্সবাজার থেকে যে ট্রেন ছাড়বে সেটি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না। মনে হচ্ছে আমি এখনো ঘুমে স্বপ্ন দেখছি। তবে ট্রেনে উঠতে পেরে খুব ভালো লাগছে।
এদিকে প্রথমবারের মতো যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল হাওয়ায় যাত্রীদের চকলেট ও ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন রেলওয়ের ডিবি পুলিশ। রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবির বলেন, আপাতত ২টি ট্রেন চলাচল করবে। জানুয়ারি থেকে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে। তবে এই মাসে বাড়ানো হবে না।