মহাস্থান নিউজ: মো: তানভীর আলম
আচ্ছা এই বাচ্চাটির কেউ ‘বাবা’ হলোনা কেন? এই বাচ্চাটির একজন মেয়ে জন্মদিয়ে ‘মা’ হলোনা কেন? পৃথিবীর আলো বুঝে উঠার আগেই জীবনের আলোনিভে গেলে, এই নবজাতকের প্রকৃত বাবা মা নবজাতকের জীবিত বা মৃত সময়ে পাশে না থাকলেও যে বাড়িটির সামনে একটি শপিং ব্যাগে ফেলে রেখে গিয়েছিল। সেই বাড়ির মালিক আল-আমিন হয়েছিল নবজাতের একদিনের অভিভাবক।
গত শনিবার বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় মহাস্থানগড় বানারসি গ্রামের আল-আমিনের বাড়ির মেইন গেটে একটি শপিং ব্যাগে শাড়ীর কাপড়ে মোড়ানো নবজাতক শিশু ফেলে রেখে যায়। সেদিন আল-আমিন পবিত্র আশুরার রাতে মিলাত মাহফিল শেষে রাত দেড়টার দিকে বাড়িতে ফেরেন। রাত ২ টার পর বাড়ির সামনে শিশু বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়ে আল-আমিন বাড়ির দরজা খুলে একটি শপিং ব্যাগ দেখতে পায়। পরে ব্যাগের মুখ খুলে দেখে একটি নবজাতক শিশু শাড়ীদিয়ে মোড়ানো। এরপর আল-আমিন শিবগঞ্জ থানায় খবর দিলে থানার পুলিশ এসে শিশুটিকে বগুড়া টিএমএসএস হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি হাসপাতালে মারা যায়। এরপর হাসপাতাল কতৃপক্ষ বগুড়া সদর থানায় খবর দিলে সদর থানায় একটি ইউডি মামলা করে সাব-ইন্সপেক্টর জহুরুল ইসলাম কে দায়িত্ব ভার দেন। তিনি শিশুটিকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে নিয়ে যান। এরপর ময়না তদন্ত শেষে শিশু টিকে আল-আমিনের অনুরোধে দাফন কাফনের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সোমবার সকালে দাফন সম্পন্ন করে বগুড়া সদর থানার সাব ইন্সপেক্টর জহুরুল ইসলামকে অবহিত করেন। একটি নবজাতক শিশু পাওয়া গেছে এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে অর্ধাশতাধিক বেশি মানুষ শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু শিশুটি ইতিমধ্যে মারা যায়। শিশুটির এমন জন্ম ও মৃত্যু সম্পর্কে বগুড়ার সুশীল সমাজ কিভাবে দেখছে তা জানতে চাওয়া হয়। বগুড়ার ইয়ুথ ক্যায়ার এর সম্পাদক তৌফিকুল আলম টিপুর কাছে। তিনি বলেন, বাচ্ছাটির কোন দোষছিল না। তবে কেন এ ভাবে শপিং ব্যাগে ফেলে রাখা হলো। এটা অবশ্যই অপরাধ তাই অপরাধীকে খুজে বের করে আইনের আওতায় আনা দরকার। এই কান্ড কোন অবিবাহিত বা অবৈধ সম্পর্কের ফলেয় হয়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।
এদিকে বগুড়া সদর থানার সাব ইন্সপেক্টর জহুরুল ইসলাম বলেন, শিশুটি একটি মেয়ে বাচ্চা ছিল। জন্মের পর তার নাড়িটিও কাটা হয়নি। বাচ্চাটির কোথাও কোন খুদ ছিল না। বাচ্চাটির ডিএনএ প্রোফাইল রাখা হয়েছে। যদি কখনো প্রয়োজন হয় তার বাবা মা কে সনাক্ত করা যাবে। এই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে জানতে চাওয়া হলো যে, মোবাইল ট্রাকিং এর মাধ্যমে নবজাতকে ফেলে রেখে যাওয়া ব্যাক্তিদের সনাক্ত করা সম্ভব কিনা। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সম্ভবনার কথা বলেন। তবে শিশুটির উদ্ধারের ঘটনাটি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় হওয়ায় সংশ্লিষ্ট থানাকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এই পুলিশ কর্মকর্তা মনে করেন এই শিশুটির জন্ম মৃত্যু অত্যান্ত বেদানাদায়ক, খামখেয়ালিপনা।
এই বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নিলে জনসাধারণ এর কাছে পুলিশ এর ভাবমূর্তি আরও ভালো হবে। তিনি শিশুটির পোষ্টমর্টেম শেষে শিশুটির নিথর দেহ গ্রহণের সময় চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।