স্টাফ রির্পোটার: রাশেদ
সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই নেতিবাচক ঘটনায় আলোচিত হয়ে আসছেন বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু। পিস্তল হাতে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা, তুচ্ছ ঘটনায় উপজেলা পরিষদে পিস্তল তাক করার ঘটনায়ও শিরোনাম হয়েছেন তিনি।
এবার দৃশ্যপটে এলেন সংসদ সদস্য বাবলুর ব্যক্তিগত দেহরক্ষী বলে পরিচিত ওমর ফারুক (৪০) নামে স্থানীয় এক যুবক। দেশীয় অস্ত্র হাসুয়াসহ তাকে আটক করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
অভিযুক্ত দেহরক্ষী ওমর ফারুককে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে উপজেলার ডোমনপুকুর এলাকা থেকে দুটি দেশীয় অস্ত্র (হাসুয়া) জব্দ করে ডিবি।
জেলা ডিবি পুলিশের ইনচার্জ মোস্তাফিজ হাসান অস্ত্রসহ ওমর ফারুককে আটকের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে দুইহাতে হাসুয়া নিয়ে হেঁটে যাওয়া ওমর ফারুকের ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তার বাড়ি শাজাহানপুর উপজেলার ডোমনপুকুর দেওয়ানপাড়ায়।
উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাদশা আলমগীর বলেন, ফারুক সংসদ সদস্যের নির্দেশে নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তার ভয়ে এলাকার লোক অতিষ্ঠ।
ডোমনপুকুর এলাকার মজিবুর রহমান বলেন, সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় ফারুক এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছেন। আমি একটি মামলার সাক্ষী। তিনি আমাকে সাক্ষ্য দিতে নিষেধ করেন। সাক্ষ্য দিলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন প্রকাশ্যে। এ বিষয়ে আমি বৃহস্পতিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এদিকে সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলুর দাবি আটক ফারুক তার দেহরক্ষী নন। তিনি বলেন, এরকম অনেক মানুষই আমার পেছনে থাকেন। তার কাজের দায় আমার নয়। ফারুক রাজনীতি করেন এবং তিনি মাঝিরা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি।
জানতে চাইলে শাজাহানপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি জিয়াউল হক জুয়েল বলেন, ফারুক সংসদ সদস্যের সঙ্গে থাকেন। তার কাজ করতে গিয়ে ঝামেলায় জড়িয়েছে। এখানে দলের নাম ব্যবহার করা যাবে না।
ডিবি ইনচার্জ মোস্তাফিজ হাসান বলেন, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওমর ফারুকের দুইহাতে হাসুয়াসহ একটি ছবি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। এছাড়া আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল ওমর ফারুক এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে চলেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ তাকে আটক করে তার দেওয়া তথ্যে দুটি ধারালো অস্ত্র জব্দ করা হয়। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৭ আসনের (গাবতলী-শাজাহানপুর) বিএনপি ও জামায়াতের ভোটাররা বাবলুকে সমর্থন দেওয়ায় তিনি জাপা প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর পর থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
একইসঙ্গে সংসদ সদস্য বাবলুর বিরুদ্ধে পিস্তল কিনে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করার অভিযোগ আছে। ওই ছবিটি ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। পরে আবারও উপজেলা পরিষদে সংসদ বাবলুর পিস্তল তাক করার দৃশ্য ভাইরাল হলে সমালোচনার কবলে পড়েন।।