মহাস্থান নিউজ:
বগুড়ার কাহালুতে খালা ও ভাগ্নিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ডাকাতির অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ডাকাতি হওয়া নগদ অর্থের কিছু অংশ ও স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার হয় অভিযুক্তদের কাছে। পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তাররা এলাকায় খারাপ নারী উপাধি রটিয়ে এই অপরাধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানিয়েছেন।
এর আগে বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করে কাহালু থানার পুলিশ। ওই দিন কাহালু থানায় অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী নারী ও তার ভাগ্নি।
গ্রেপ্তার পাঁচ জন হলেন, কাহালু উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নের আবুল কাশেম মানিক (৩৫), রাকিব হোসেন (২৩), শাকিল হোসেন (২৩), আতিক রহমান প্রান্ত (২২) ও হাবিবুর রহমান হাবিব (২৫)।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, ভুক্তভোগী নারী (৩৯) নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্টসে কর্মরত। গত ১২ জুলাই তার বোনের মেয়েকে (১৫) নিয়ে রংপুরের তারাগঞ্জে আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছিলেন। যাত্রায় রংপুরের বাসিন্দা মো. রব্বানী নামে তার এক সহকর্মীও ছিলেন সাথে। পথে রাত ২টার দিকে বগুড়ার সদরের বারোপুর এলাকায় বাসটি নষ্ট হয়। তখন উপায় না পেয়ে রব্বানীর পরিচিত পাইকড় ইউনিয়নের কুশলীহার গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে আশ্রয় নেয়।
এসপি বলেন, পরের দিন সকালে আবুল কাশেম এলাকায় রটিয়ে দেয় আব্দুর রাজ্জাক বাড়িতে খারাপ মেয়ে নিয়ে এসেছে। বিষয়টি জানতে পেরে ওইদিন সন্ধ্যার দিকে আব্দুর রাজ্জাক তার অটোভ্যানে ভুক্তভোগী নারী, তার বোনের মেয়ে ও রব্বানীকে রংপুরের বাস ধরার জন্য নিয়ে যায়। কিন্তু পথে বাগইল গ্রামের বড়পুকুর ব্রিজ এলাকায় আবুল কাশেম ও অন্যরা তাদের পথরোধ করেন। এ সময় তারা ভুক্তভোগীদের মারধর করে ৭২ হাজার টাকা, একজোড়া কানের দুল, মোবাইল কেড়ে নেয়। পরে ওই নারী ও তার ভাগ্নিকে রাস্তা থেকে একটু দূরে নিয়ে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে।
নির্যাতনের ফলে ভুক্তভোগীরা অসুস্থ হয়ে আবার নারায়ণগঞ্জে ফিরে যান। পরে সুস্থ হয়ে স্বামী, সহকর্মী রব্বানী ও আব্দুর রাজ্জাককে সাথে নিয়ে কাহালু থানায় এসে লিখিত অভিযোগ করেন ওই নারী। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে ওই পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে। বাকিদের ধরতেও অভিযান চলছে।
জেলা পুলিশের প্রধান কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারদের পেশাগত বা রাজনৈতিক পরিচয় এখনও জানা যায়নি। আমরা খোঁজখবর করছি। তবে তাদের বিরুদ্ধে পূর্বের কোনো অপরাধ বা মামলা নেই। গ্রেপ্তারদের কাছে বিস্তারিত জানতে আদালতে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার, আব্দুর রশিদ, মোতাহার হোসেন, সিনিয়র এএসপি নাজরান রউফ, কাহালু থানার ওসি মাহমুদ হাসান উপস্থিত ছিলেন।