মহাস্থান নিউজ:
সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। এর প্রভাব পড়েছে নওগাঁয়। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় নতুন করে আরো তিনজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত সবাই ঢাকা ফেরত। কোরবানিতে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে আসা ব্যক্তিরাই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এ কারণে ঈদের পর জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য নওগাঁ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সপ্তম তলায় আলাদা একটা ইউনিট করা হয়েছে। জ¦র হলে ডেঙ্গু পরীক্ষা করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
নওগাঁ জেলা সির্ভিল সার্জন কার্যালয় পরিসংখ্যান শাখা সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ সদর একজন, ধামইরহাটে একজন ও পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ভর্তি আছে। তবে গত এক সপ্তাহে চারজন পজেটিভ হয়েছে। চলতি বছরের জুন মাস থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত মোট ২৩ জন ডেঙ্গু পজেটিভ হয়েছে। এরমধ্যে চলতি মাসে ১১ জুলাই পর্যন্ত ৯ জন, জুন মাসে ১০ এবং মে মাসে ২ জন। বলা যায় বর্তমানে উদ্বেগজনক হারে ডেঙ্গু বাড়ছে। যারা ডেঙ্গু পজেটিভ হয়েছে তারা সবাই ঢাকা ফেরত বলে জানা গেছে। আক্রান্তরা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
শহরের বাঙ্গাবাড়িয়া মহল্লার রোহান হোসেন। একটি কোম্পানির অধীনে নওগাঁতে চাকরি করেন। ঈদের পর ঢাকায় কোম্পানির একটি জরুরী আলোচনা ছিল। ঈদের পর পরিবহনে ঢাকা ফেরত যাত্রীদের চাপ বেশি থাকবে মনে করে গত ২৭ জুন তিনি ঢাকায় যায়। সেখানে ঈদ করেন এবং আত্মীয়দের বাসায় ছিলেন। এরপর গত ২ জুলাই কোম্পানির আলোচনায় অংশ নেয়। পরদিন এলাকায় ফিরে আসেন।
রোহান হোসেন বলেন- আসার পর থেকে শরীরে হালকা জ¦র হচ্ছিল। সাথে সামান্য কাশি ও সর্দি হয়। গত শুক্রবার সারাদিন ভালছিলাম। কিন্তু শনিবার(৮ জুলাই) ভোর থেকে শরীরে প্রচন্ড জ¦র হয়ে ঝাঁকানি-কাপানি শুরু হয়। সকালে ঔষধ সেবন করা হয়। এরপর বিকেলে পল্লী চিকিৎসক দেখানো হয়। কিন্ত কোন কাজ হয়নি। পরে রোববার সকাল ১০টায় সদর হাসপাতালে ভর্তি হলে কিছু পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়। পরে পরীক্ষায় পজেটিভ (ডেঙ্গু) হয়েছে বলে জানানো হয়। অসুস্থ হওয়ার পর শরীরে কোনো ধরণের শক্তি পেতাম না। এখন মোটামুটি সুস্থ।
নওগাঁ জেলা সির্ভিল সার্জন ডা. আবুহেনা মোহাম্মদ রায়হানুজ্জামান সরকার বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে ইতোমধ্যে মন্ত্রনালয় ও সচিবালয় থেকে আমাদের কিছু দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। সে নির্দেশনা অনুযায়ি আমরা পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছি। জ¦রের কোন রোগী আসলে তাদের যেন অবশ্যই ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়।
তিনি বলেন- জনগনকে সচেতন করার জন্য মাসিক সমন্বয় সভায় কিভাবে মশক নিধণ করা যায় সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কোন পাত্রে যেন পানি জমে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। লিফলেট বিতরণ করে প্রচার-প্রচারণা করা হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে যা বিভিন্ন মসজিদে দেওয়া হবে যেন মুসল্লিদের মাঝে আলোচনা করা হয়। মসক নিধন কার্যক্রম জোরদার করণে শহরের কার্যক্রম পরিচলানা করা হবে।