মহাস্থান নিউজ:
সোমবার বগুড়া পৌরসভার বাজেট ঘোষনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।
বগুড়া পৌরসভার ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে ২৪২ কোটি ৫৭ লাখ ৪৭ হাজার ৫৮১ টাকা।
সোমবার বেলা ১১টায় শহীদ টিটুমিলনায়তনে বগুড়া পৌরসভা আয়োজিত এই বাজেট ঘোষণা করা হয়।
বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশার সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার এবং বানিজ্যিক শহর হচ্ছে বগুড়া। আমরা সবাই বগুড়ার উন্নয়ন চাই। অনেকেই মনে করেন বগুড়া এখনও অনেক পিছিয়ে আছে। আমি মনে করি বগুড়া পিছিয়ে নেই। কারণ বগুড়া হলো উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলার রাজধানী। বগুড়ার সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জনগণ শিক্ষাসহ সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় বগুড়া এগিয়ে আছে। অতএব বগুড়া পিছিয়ে আছে এ কথা আমরা বলবো না।
তিনি আরো বলেন, বগুড়ায় পরিকল্পিত যে উন্নয়ন হয়নি সেটা আমরা মনি করি না। আপনারা সাসেক প্রজেক্ট যদি দেখেন এই সাসেক ১ এবং ২ প্রজেক্ট যখন বাস্তবায়ন হবে তখন ঢাকা থেকে সড়ক পথে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘন্টায় বগুড়ায় চলে আসা যাবে। আমাদের রেললাইন প্রজেক্ট হয়েছ। এটি অধিগ্রহণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যদি রেললাইন প্রজেক্ট বাস্তাবয়ন হয় তাহলে অল্প সময়ের ঢাকা থেকে বগুড়া পৌঁছা যাবে। এছাড়াও বগুড়ায় একটি বিসিক শিল্পনগরী রয়েছে। আরেকটি শিল্পনগরীর প্রস্তাব আছে। আমাদের ইউনিভার্সিটির দাবি ছিল। সেটিও হয়ে যাবে। বগুড়ায় আন্তর্জাতিক শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম রয়েছে। এই স্টেডিয়ামে যাতে নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলো পরিচালিত হয় সেজন্য আমরা অনুরোধ করেছি বিসিবিকে। বগুড়া পৌরসভা বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় পৌরসভা। বগুড়া সিটি করর্পোরেশন হওয়ার মতো একটি জায়গা। এত বড় একটি পৌরসভায় পরিকল্পিত উন্নয়ন দরকার। বগুড়ায় এখন যেটি দরকার সেটি হলো একটি সমন্বিত মাস্টার প্লান। যে মাস্টার প্লানের মাধ্যমে বগুড়ায় পর্যায়েক্রমে উন্নয়নমূলক কাজ হবে।
বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে বগুড়া পৌরসভার রেজাউল করিম বাদশা বলেন, দেড়শো বছরের পুরাতন এ পৌরসভা দেশের প্রাচীনতম পৌরসভাগুলির মধ্যে অন্যতম। প্রায় ১০ লাখ লোক এই শহরের বসবাস করে। প্রশাসন ও জনসাধারণের সহায়তায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে বগুড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোকে সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। পুরো শহরকে সিসিটিভির আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। ভবিষ্যতে সাশ্রয়ী মূল্যে পৌর পরিবহন সার্ভিস চালু করা ও করতোয়া নদীর উভয় পাশ দিয়ে হেঁটে চলার পথ তৈরি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
এছাড়াও বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি শহরের সৌন্দর্যবর্ধন, স্বাধীনতা চত্বর নির্মাণ, রাস্তা ও ড্রেন নির্মান, মহিলাদের জন্য গণশৌচাগার নির্মান, হরিজন করোনী নির্মান, আধুনিক কসাইখানা নির্মান, ঈদগাহ উন্নয়ন, যানজট নিরসন, ফুটপাত দখলমুক্ত রাখা, হাটবাজার উন্নয়ন, মশক নিধন, প্রবীনদের জন্য বিশ্রামাগার নির্মান, মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বৃত্তি প্রদান, অনলাইন সেবা, ফায়ার হাইড্রেন্ট নির্মান, বৃক্ষরোপন, ভেজাল বিরোধী অভিযান, বগুড়া পৌর উচ্চ বিদ্যালয়কে কলেজে পরিণত করাসহ নাগরিক সেবা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেয়ার কথা এই বাজেটে বলা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বগুড়া পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহজাহান আলমনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মাসুম আলী বেগ, সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট গাজী মূয়ীদুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বগুড়ার সাবেক কমান্ডার রুহুল আমিন বাবলু, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ পরিমল চন্দ্র দাস, প্যানেল মেয়র-২ আলহাজ শেখ, প্যানেল মেয়র-৩ শিরিন আক্তারসহ অন্যান্য কাউন্সিলরবৃন্দ।