মহাস্থান নিউজ:
গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন করায় জেলা প্রশাসকসহ ৪জনের নামে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা নং ৪৬০/২০২৩ অন্য। জেলা বগুড়ার ১ম সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ, সংগঠক তানভীর আলম। বিচারক শোয়েবুর রহমান অভিযোগ আমলে নিয়ে নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে বিবাদীদেরকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন।মামলার বিবাদীরা হলেন বগুড়া জেলা প্রশাসক ও পদাধিকার বলে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, মোঃ মাসুদুর রহমান মিলন, সিনিয়র জেলা নির্বাচন মোঃ মাহমুদ হাসান এবং প্রিজাইডিং অফিসার ও তৎকালীন শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ আনিসুর রহমান।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেছেন, “বিবাদীগণ গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ৭:১, অনুচ্ছেদ ৮ এর ০৮:৮, ‘অনুচ্ছেদ ৮ এর ৮:২৩, অনুচ্ছেদ ১১ এর ১১:৮ বিধি লংঘন করে জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যনির্বাহী পর্ষদ নির্বাচন-২০২৩ এর ভোটার তালিকায় ১। ভোটার ক্রমিক নং ৫৪, হাবিব রেজুয়ান সিইও এম.এইচ ইন্টারন্যাশনাল, ২। ভোটার ক্রমিক নং ৫৯, মোঃ মাসুম বিল্লাহ, সভাপতি, এস.আর স্পোটিং ক্লাব, ৩। ভোটার ক্রমিক নং ৬০, সারীক মাহবুব ইবনে সেলিম, সভাপতি, এ.জেও স্পোটিং ক্লাব, ও ৪। ভোটার ক্রমিক নং-৬৬, সামিউল হক শিমুল, সাধারন সম্পাদক, সজিব সংঘ কে ভোটার করা হয়েছে। গত ২৮/৪/২৩ ইং তারিখের চুড়ান্ত ভোটার তালিকা হিসাবে প্রকাশ করিলে, জনাব শাজাহান আলী বাবু, টনি স্মৃতি সংঘ, বগুড়ার প্রতিনিধি হিসাবে ১নং বিবাদী বরাবর গত ১১/৫/২৩ ইং তারিখে “ভোটার তালিকা থেকে মুল ভোটারদের বাদ দিয়ে অবৈধভাবে অযোগ্য ব্যক্তিদের নতুন ভোটার করে, আয়োজিত নির্বাচনী তপশীল বাতিলের আবেদন করেন।” তৎপ্রেক্ষিতে মাননীয় জেলা প্রশাসক ও সভাপতি বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা, বগুড়া ও ১নং বিবাদী “রিটানিং অফিসার জেলা ক্রীড়া সংস্থা ২০২৩” ও ৪নং বিবাদীকে “উল্লেখিত বিষয়ের তদন্ত পূর্বক বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিন”, মর্মে উল্লেখ করিয়া উক্ত তারিখেই আদেশ প্রদান করেন। উক্তরুপে তৎকালীন রিটানিং অফিসার ও ৪নং বিবাদীকে সরিয়ে ৩নং বিবাদী কে ‘জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন-২০২৩’ পরিচালনার জন্য রিটানিং অফিসার হিসেবে স্থলাভিষিক্ত করেন। উক্তরুপে ক্রটিযুক্ত বেআইনী ও অবৈধ ভোটার তালিকার বিষয় বিবাদীগন সম্যক অবহিত ও অবগত থাকা স্বত্বেও ২নং বিবাদীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে সঠিক ও নির্ভুল বিধি সম্মত নতুন ভোটার লিষ্ট প্রস্তুত ও প্রকাশ করা ছাড়াই ও ইচ্ছাকৃতভাবে বিষয়টি গোপন রাখিয়া ৩নং বিবাদী স্বাক্ষরীত, স্বারক নং বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা-২০২৩-৪১২, তারিখ ২৯/৫/২০২৩ খ্রিঃ প্রকাশ ও প্রচার করেন। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে ভোটার লিস্ট সংক্রান্ত কোন বিষয় উল্লেখ করেন নাই। অথচ গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ২৬ এর ২৬:৫ মতে ভোটার তালিকা চুড়ান্ত করিবার বিষয়ে সংক্ষুব্ধ হইলে ৩ কার্য দিবসের মধ্যে আপীল দায়েরের কথা বলা আছে। যেখানে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ৭ কার্য দিবসের মধ্যে আপীল বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করার বাধ্য বাধকতা রহিয়াছে। এমনকি উক্ত বিধিতে ১০ কার্য দিবস নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিত রাখিবে মর্মে উল্লেখ রহিয়াছে। অথচ অতীব গুরুত্বপূর্ন বিষয়টি তর্কিত ভোটের তর্কিত সিডিউলে উল্লেখ না করিয়া সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তিগনকে বিধি মোতাবেক আপীলের সুযোগ দান হইতে বঞ্চিত করায় তাহাদের মূল্যবান অধিকার ক্ষুন্ন হইয়াছে। ২নং বিবাদীর অস্বাভাবিক ও বেআইনী অভাবে জেলা বগুড়ার একমাত্র সাবেক আন্তর্জাতিক মর্যাদা সম্পন্ন ক্রিকেট ভেন্যু “শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম” বিসিবি তাদের ক্রিকেট ভেন্যুর মর্যাদা প্রত্যাহার করিয়াছিল। পরবর্তীতে, ১নং বিবাদী মাননীয় জেলা প্রশাসক, মাননীয় সাংসদ সদস্য (সদর-৬ আসন), জেলা পুলিশ সুপার, সাংবাদিকবৃন্দ, ক্রীড়ামোদী জনগন ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় আবার সেই হৃত গৌরব ফিরিয়ে দিয়েছে বিসিবি। উক্তরুপে তর্কিত সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় ২নং বিবাদী পুনঃ নির্বাচিত হইয়া ক্রীড়া বান্ধব পরিবেশ নষ্ট করার পুনরাবৃত্তি রোধে উক্ত বাতিলযোগ্য নির্বাচন অবৈধ ও ফলবলহীন ঘোষনা হওয়া আবশ্যক। বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংগঠন সমূহের গণতান্ত্রিক চর্চার পথ বন্ধ করে ২,৩ ও ৪নং বিবাদীর যোগসাজসী, ভুয়া ও অগ্রহনযোগ্য তর্কিত নির্বাচন ক্রীড়াবিদ, সাংবাদিক, সুশীল সমাজসহ সংশ্লিষ্ট সকলের ন্যায়পর অধিকার ফিরিয়ে দিতে ও খেলা আয়োজনে ক্রীড়ানুরাগীদের উৎসাহিত করিতে অত্র দরখাস্ত মঞ্জুর হওয়া আবশ্যক।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদের ২৬: ২ এ বলা হইয়াছে সাধারন সম্পাদক ও ২নং বিবাদী গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ৮ ও ১১ মোতাবেক ক্লাব/সমিতি/ প্রতিষ্ঠান সমুহের কাউন্সিলরের মনোনয়নের জন্য ১৫ দিনের নোটিশে প্রতিনিধির নাম আহ্বান করিবেন। প্রাপ্ত প্রতিনিধির নামের তালিকা নির্বাচন কমিশন গঠনের সাথে সাথে নির্বাচন কমিশনের নিকট প্রেরন করিবেন। অথচ যথাযথ নিয়মে তাহা না করায় অযোগ্য ব্যক্তি দ্বারা ক্রটিযুক্ত ভোটার তালিকা ও ক্রুটিযুক্ত ও বাতিলযোগ্য নিবাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় প্রার্থক ও সাক্ষীগনের সুনাম ও জেলার ক্রীড়া সংস্থার বিধি ও গঠনতন্ত্র মোতাবেক স্বচ্ছ অবাধ ও প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক সুষ্ট নির্বাচনের মাধ্যমে কার্যকরী পরিষদের নির্বাচিত ক্রীড়ানুরাগী ব্যক্তিদের দ্বারা কমিটি গঠিত হয় নাই। তৎকারনে অসাধু উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোন ভোটার বা কাউন্সিলর কে ভোটার লিষ্ট সরবরাহ করা হয় নাই। যাহার দরুন নির্বাচনের পূর্বে কেহ কোন আইনগত পদক্ষেপ লইতে পারেন নাই। উক্তরুপে কথিত প্রথম বিতর্কিত তপশীলের ক্রটিযুক্ত ভোটার লিষ্টের কারনে তপশীল বাতিল হইলেও উক্ত ভোটার লিষ্ট উদ্দেশ্যমুলকভাবে সংশোধন না করিয়া ৩নং বিবাদী কর্তৃক পুনরায় তপশীল ঘোষনা করতঃ এবং উক্ত তপশীলে ভোটার লিষ্টের কথা গোপন করতঃ তর্কিত ৪নং বিবাদীকে প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে দায়িত্ব অর্পন করিয়া ২, ৩ ও ৪নং বিবাদীগন পরস্পর যোগসাজসে তাহাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব ও গুরুত্বপূর্ন পদের ক্ষমতার অপব্যবহার করিয়া গত ২৪/৬/২৩ ইং তারিখে একটি অবৈধ বাতিলযোগ্য প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত করায় ও কথিত তপশীল ঘোষনা করিলেন জনাব মোঃ মাহমুদ হাসান সিনিয়র নির্বাচন অফিসার, বগুড়া। অথচ নির্বাচনী ফলাফল শীটে স্বাক্ষর করিয়াছেন পূর্বোক্ত বাতিল ঘোষিত তপশীল ঘোষনাকারী ৪নং বিবাদী উক্ত বিষয় সমস্ত নির্বাচনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করিয়াছে।” বাদী একই সাথে দেওয়ানী কার্যবিধির ৩৯ আদেশ ১ রুল এবং ১৫১ ধারার বিধান মত নির্বাচনের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করলে বিচারক নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে বিবাদীদেরকে কারন র্দশানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বাদী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এ্যাড: শাহাদত হোসেন সহল।