মহাস্থান নিউজ:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির আহবায়ক ও তার সহযোগীদের উপর হামলা করেছে সদ্য সাবেক কমিটির নেতারা। শুক্রবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-বিজয়নগরের নবনির্মিত শেখ হাসিনা সড়কের শিমরাইলকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এসময় জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক শাহিনুর রহমানের উপর লাঠির বাড়ি ও কিল-ঘুষি দিলে তিনি তিতাস নদীর পানিতে নেমে যান। তবে সঙ্গে থাকা বিশাল (২৮) নামের এক কর্মী হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৮ জুন মধ্যরাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জেলা ছাত্রদলের ৭ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আহবায়ক করা হয় শাহীনুর রহমান ও সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তীকে। নবগঠিত কমিটির আহবায়ক শাহীন, সদস্য সচিব সমীর, যুগ্ম আহবায়ক এলভীন লস্কর ও আব্দুল গাফফার রিমন শুক্রবার (৭ জুলাই) সকালে জেলা কৃষকদলের আহবায়ক আবু শামীম মো. ভিপি শামিমের কান্দিপাড়ার বাসায় যান।
সেখানে সদ্য ঘোষিত কমিটির সদস্যদের শুভেচ্ছা দেয়া হচ্ছে বলে জানতে পারেন পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। জেলা ছাত্রদলের বিদায়ী কমিটির আহবায়ক ফুজায়েল চৌধুরী, সদস্য সচিব মহসিন মিয়া ও যুগ্ম আহবায়ক সাজিদুর রহমানের নেতৃত্বে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা কৃষক দলের আহ্বায়কের কান্দিপাড়ার বাড়িতে দা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় আবু শামীমের বাড়ির পেছন দিয়ে সদ্য ঘোষিত কমিটির সদস্যরা পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। পরে স্থানীয় লোকজন ও যুবদলের নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের বুঝালে ছাত্রদলের বিদায়ী কমিটির সদস্যরা সেখানে থেকে চলে আসেন।
দিন বিকেলে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা নতুন আহবায়ক শাহিনুর রহমান ও জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক কাউসার কাউন্সিলরের বাড়িতে হামলা করে। এরপর দিন রাতে দুই গ্রুপের মধ্যে শহরের কান্দিপাড়ায় গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এর একদিন পর শহরের লোকনাথ দীঘির পাড়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেয় উভয় পক্ষ। পরে নবগঠিত কমিটির নেতারা শহরতলীর বিরাসারে কর্মসূচী করতে চাইলে সেখানে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এসময় দুইপক্ষের মধ্যে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার (৭ জুলাই) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-বিজয়নগরের নবনির্মিত শেখ হাসিনা সড়কের শিমরাইলকান্দি তিতাস নদী এলাকায় নবগঠিত কমিটির আহবায়ক শাহিনুর রহমান ও আরও কয়েকজন ঘুরতে যান। এই খবরে সেখানে যান সদ্য সাবেক সদস্য সচিব মহসিন মিয়া। সেখানে মহসিন গেলে আহবায়ক শাহিন ও বিশালের দেখা হলে তাদের হাতাহাতি হয়। এরই মাঝে সেখানে দলবল নিয়ে উপস্থিত হন সদ্য সাবেক আহবায়ক ফুজায়েল চৌধুরী। এসময় আহবায়ক শাহিনের উপর লাঠিসোঁটা দিয়ে আঘাত করলে তিনি তিতাস নদীর পানিতে নেমে আত্মরক্ষা করেন। তার সঙ্গে থাকা বিশাল ফেরাতে আসলে তাকে পিটিয়ে আহত করেন। পরে তাদের উদ্ধার করে জেলা সেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা উদ্ধার করে নিয়ে যান। এরমধ্যে বিশালকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এই বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সদস্য সচিব মহসিন মিয়া বলেন, বিকেলে আমরা ঘুরতে যাই। সেখানে আহবায়ক শাহিন আমাদের উপর হামলা করার চেষ্টা করেন। পরে আমরা আত্মরক্ষা করেছি।
তবে এই বিষয়ে জানতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক শাহিনুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহরাব আল হোসাইন জানান, ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে সেখানে কাউকে গিয়ে পুলিশ পায়নি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।