মহাস্থান নিউজ:কাঁচামরিচের দাম ইতিহাসে সর্বোচ্চ বৃদ্ধির জন্য সরকারের চিহ্নিত সিন্ডিকেটকে দায়ী করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এমন সিন্ডিকেশন কেবল দুর্বৃত্তপরায়ণ সরকার থাকলেই সম্ভব। চারদিকে গডফাদার, মাফিয়া আর সিন্ডিকেটবাজদের জয়-জয়কার। সরকারের মন্ত্রী ও প্রভাবশালী দলের নেতাদের জড়িত থাকার কারণে এই সিন্ডিকেট প্রচণ্ড শক্তিশালী। যে কারণে ভারতে কাঁচা মরিচের কেজি ২৫ টাকা অথচ কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দিলেও সিন্ডিকেটের কারণে বাংলাদেশে তা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি থেকে কোথাও কোথাও ১১০০-১২০০ টাকা কেজি।ঈদের ছুটির পরদিন খুলনায় একটি বাজারে ১ হাজার ২০০ টাকায় কেজিতে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচের ঝাঁঝে চোখের পানিতে ভাসছে সারাদেশ।
রোববার (২ জুন) সকালে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ায় পদে পদে মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে।সড়কে মৃত্যুর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়ী। ঈদের ছুটিতে প্রায় ৩৫ জন মানুষের জীবনহানি ঘটেছে। এই ঘটনা ঘটেছে শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাফিলতির কারণে। তারা বেপরোয়া চালকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় কাজে ব্যবহার এবং তাদের নির্বিকার ভূমিকার কারণে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দাপটে গোটা জাতি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আজ দেশকে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করার জন্যই শুধু সাধারণ মানুষ নয়, পুলিশ সদস্যদেরও জীবন যাচ্ছে। পরশু একজন পুলিশ সদস্যকে মেরে ফেলেছে ছিনতাইয়ের সময়।
রিজভী বলেন, ক্ষমতার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে গড়ে ওঠা দানবদের আক্রমণ থেকে কেউ রেহাই পাচ্ছে না। বিশেষ করে এই সমাজে নারীদের জীবনের যেন কোনো মূল্যই নেই। এমনই এক দুঃসময় চলছে যখন বোনকে উত্যক্ত করার কারণে বিচার চাইতে গিয়ে তরুণ খুন হয়। পিতা-মাতা নিজের মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের কবলে পরে জীবন হারায়। প্রতিনিয়ত নিজের বোন বা কন্যা সন্তানের সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে প্রচণ্ড নাজেহালসহ জীবন দিতে হয়।
রিজভী বলেন, কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন-কাঁচা মরিচের দাম বাড়লে সবাই চিৎকার করে।এখন থেকে কাঁচা মরিচ কিনে রোদে শুকিয়ে রেখে দেন, বর্ষাকালে যখন দাম বাড়বে তখন সেখান থেকে খাওয়া যাবে। তার এই বক্তব্যের পর থেকে হুহু করে বাড়ছে কাচা মরিচের দাম।সিন্ডিকেট কাচা মরিচ থেকে শত শত কোটি টাকা লুটপাট করে নিচ্ছে।
রিজভী যশোরে সম্পূর্ণ মিথ্যা সাজানো মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন নিতে গেলে আওয়ামী লীগের সরকারের নির্দেশে যশোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সদস্য সচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, অন্যতম সদস্য মিজানুর রহমান খানসহ যুবদল ও ছাত্রদলের ২১ নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সরকারের বিরুদ্ধে সারাদেশে গড়ে ওঠা তুমুল আন্দোলনে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে গায়েবি মামলা-গ্রেফতার-নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। তবে এটা করে শেষ রেহায় মিলবে না। তাদের পতন অতি সন্নিকটে। অবিলম্বে এই নেতাদের মুক্তি দাবি করেন রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।