মহাস্থান নিউজ:
‘মহীনের ঘোড়াগুলি’ ব্যান্ডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তাপস দাস মারা গেছেন। তিনি সবার কাছে ‘বাপিদা’ নামে পরিচিত ছিলেন। রোববার (২৫ জুন) দুপুর ১২টা ২৩ মিনিটে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
দীর্ঘ দিন ধরে ফুসফুস ক্যানসারে ভুগছিলেন বাপিদা। ব্যয়বহুল এ চিকিৎসার খরচ জোগাতে তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন দুই বাংলার শিল্পীরা।
কিংবদন্তি এই ব্যান্ড তারকার মৃত্যুর খবর জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন কলকাতার সংগীতশিল্পী রূপম ইসলাম। তিনি লিখেছেন— ‘এরকম কত বাঙ্ময় মুহূর্তই রয়ে গেল শুধু…। সচল হয়েই থেকে গেল গানজীবনের অনন্ত পথ চলা… থেমে গেল বললে ভুল হবে, মারাত্মক ভুল…। বাপিদা, সশরীরে তুমি আর নেই। কিন্তু সর্বত্র এভাবেই তুমি থাকবে। লাল সেলাম। বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।’
চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রকাশ্যে আসে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন বাপিদা। এ খবর শোনার পর তার পাশে দাঁড়ান কলকাতার সংগীতশিল্পীরা। চিকিৎসার খরচ জোগাতে তৈরি হয় তহবিল। ‘ফসিলস’, ‘বর্ণ অনন্য’ দল শিল্পীর চিকিৎসার খরচ জোগাতে একাধিক কনসার্টের আয়োজন করে। বাংলাদেশেও কনসার্টের আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে আগামী ১৪ জুলাই ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে কনসার্ট হওয়ার কথা।
এরই মাঝে বাপিদার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তার প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
‘মহীনের ঘোড়াগুলি’ কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত প্রথম বাংলা রক ব্যান্ড। ১৯৭৪ সালে গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এটি গঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন অন্য সদস্যরা ছিলেন— তপেস বন্দ্যোপাধ্যায়, রঞ্জন ঘোষাল, তাপস দাস, আব্রাহাম মজুমদার, বিশ্বনাথ চট্টোপাধ্যায় ও প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়।
প্রথম দিকে ব্যান্ডটির নাম ছিল ‘তীরন্দাজ’। পরে এর নামকরণ করা হয় ‘গৌতম চ্যাটার্জি বিএসসি অ্যান্ড সম্প্রদায়’। এরপর রঞ্জন ঘোষালের প্রস্তাবে ব্যান্ডটির নাম রাখা হয় ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’। এই নাম এসেছে কবি জীবনানন্দ দাশের ‘সাতটি তারার তিমির’ কাব্যগ্রন্থের ‘ঘোড়া’ শিরোনামের কবিতার দ্বিতীয় পঙক্তি থেকে।
দুই বাংলায় জনপ্রিয় হওয়া বেশ কিছু গানের কথা লিখেছেন বাপিদা। গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের পাশে থেকে ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’ গানের দলকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। তাদের ‘পৃথিবী’, ‘টেলিফোন’, ‘তোমায় দিলাম’ গানগুলো বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে।