মহাস্থান নিউজ:
এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়কের উন্নয়নকাজের সঙ্গে এবার উত্তরের পথে ঈদযাত্রায় দুর্ভোগ বাড়াবে পশুর হাট। যানবাহনের চাপ, মহাসড়কের উন্নয়নকাজ এবং গরুর হাট—এই তিন কারণে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পাড় থেকে এবার যানজট সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সাল থেকে এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। অন্যান্য সময় স্বাভাবিক থাকলেও ঈদে যানবাহনের চাপ বাড়লে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে যানজট লেগে যায়। বঙ্গবন্ধু সেতুু হয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ২২ জেলার যানবাহন চলাচল করে সিরাজগঞ্জের মহাসড়ক দিয়ে। উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটারজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। মহাসড়কের দুটি লেনে দাঁড়িয়ে থাকে হাজার হাজার গাড়ি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুর্ভোগ পোহাতে হয় ঘরমুখো মানুষের। এবারও দুর্ভোগে পড়তে হবে যাত্রীদের। যানজটের মূল কারণ হবে মহাসড়কের পাশের পশুর হাটগুলো। ইতোমধ্যে হাটগুলো নিয়ন্ত্রণ এবং ঈদযাত্রা স্বাভাবিক করতে কাজ শুরু করেছে হাইওয়ে পুলিশ।
মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ অংশের বিভিন্ন স্থান ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে, চারলেনের উন্নয়নকাজ চলছে। সড়কের দুই পাশে মাটি ভরাট করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ সংস্কার করা হচ্ছে। কোনও কোনও স্থানে কাজ চলার কারণে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন অন্য লেনে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ঈদযাত্রা উপলক্ষে খানাখন্দগুলো সংস্কার শেষে খুলে দেওয়া হবে রাস্তার বিভিন্ন লেন ও সেতু।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পাবনা-নগরবাড়ী মহাসড়কের পাশে রয়েছে চারটি এবং ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পাশে রয়েছে একটি গরুর হাট। এর মধ্যে মহাসড়কের উল্লাপাড়ায় জেলার সবচেয়ে বড় অর্থাৎ বোয়ালিয়া পশুর হাট, মহাসড়ক থেকে একটু ভেতরে গ্যাসলাইন হাট, বড়হর হাট, শাহজাদপুর উপজেলায় তালগাছি হাট ও ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পাশে চান্দাইকোনা পশুর হাট। এসব হাটে এলোমেলোভাবে যানবাহন রাখা হয়। সেইসঙ্গে গাড়ি থেকে পশু ওঠানামা করা হয়। ফলে মহাসড়কে যানজট লেগে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এরই মধ্যে এসব হাট জমে উঠেছে।
বোয়ালিয়া পশুর হাটের ইজারাদার সোবহান ফকির বলেন, ‘আমাদের মূল গরুর হাট স্কুল মাঠে। কিন্তু ঈদের আগে গরুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় জায়গা সংকটের কারণে কিছু গরু সড়কের পাশে রাখা হয়। সেইসঙ্গে পশুবাহী যানবাহনও সড়কের পাশে রাখতে হয়। এতে সাময়িক যানজট সৃষ্টি হয়। আমরা চেষ্টা করবো, যাতে মহাসড়কে দীর্ঘ সময় পশুবাহী যানবাহন না রাখা হয়।’
বোয়ালিয়া পশুর হাটে অতিরিক্ত হাসিল নেওয়ার অভিযোগ করেছেন ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোবহান ফকির বলেন, ‘সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হাসিল ৪০০ টাকা। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে হাটে প্রায় ২০০ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। তাদের জন্য অতিরিক্ত ১০০ টাকা করে বেশি নেওয়া হয়।’
যানবাহনের চাপ, মহাসড়কের উন্নয়নকাজ এবং গরুর হাট—তিনটি বিষয় মাথায় রেখে সড়ক স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করবেন বলে জানালেন হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস.এম বদরুল কবির। তিনি বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে ইতোমধ্যে পশুর হাটের ইজারাদার ও মহাসড়কের পাশের হোটেল মালিকদের সঙ্গে দুই দফা আলোচনা করেছি। সড়কের পাশে যেসব পশুর হাট রয়েছে, তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সড়কের ওপরে গাড়ি পার্কিং কিংবা গরু ওঠানামা করা যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সড়কের উন্নয়নকাজের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা আশ্বাস দিয়েছেন, ২০ জুনের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ করবেন। এরপর বাঁশ বেঁধে লেন আলাদা করে দেবো আমরা। আগামী ২৫ জুন থেকে হাইওয়ে পুলিশের দুই শতাধিক সদস্য সড়কে মোতায়েন থাকবে।’