মহাস্থান নিউজ:
বগুড়ায় শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম থেকে জনবল প্রত্যাহারসহ ভেন্যু বাতিলের প্রতিবাদে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করা মো. রুমেল অবশেষে তার অনশন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার (৮ মার্চ) দুপুরে তার অনশন ভাঙ্গান বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোষাধ্যক্ষ শামীম কামাল। তবে ১৭ মার্চের মধ্যে তার দাবি না মানা হলে ১৮ মার্চ থেকে আবারও আমরণ অনশন করবেন বলে জানান রুমেল।
চান্দু স্টেডিয়ামের ভেন্যু বাতিলে বিসিবির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে শহরের সাতমাথায় ৫ মার্চ থেকে অনশন করছিলেন শহরের এক যুবক মো. রুমেল। বিসিবির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এ অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন রুমেল। তৃতীয় দিন মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেলে রুমেল অনশন অবস্থায় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বগুড়াবাসীর প্রাণের দাবি আদায়ে প্রয়োজনে আত্মাহুতি দেবেন। তার পরদিন বুধবার দুপুরে অনশনস্থলে আসেন বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোষাধ্যক্ষ শামীম কামাল। এ সময় তার সঙ্গে বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জেএম রউফসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। শামীম কামাল অনশনরত রুমেলকে জানান, স্টেডিয়ামের বিষয়টি নিয়ে উচ্চ মহলে যোগাযোগ হচ্ছে। অচিরেই এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার হবে। তাই তাকে অনশন ভঙ্গ করার অনুরোধ করেন। রুমেলকে জানানো হয় জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা তাকে পাঠিয়েছেন এই অনশন ভঙ্গ করার জন্য। এর পরেই রুমেল অনশন ভাঙ্গার জন্য রাজী হলে শামীম কামাল রুমেলকে জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙ্গান। এ সময় রুমেল সাংবাদিকদের জানান, আগামী ১৭ মার্চ পর্যন্ত তার অনশন স্থগিত করলেন। এই সময়ের মধ্যে তার দাবি মানা না হলে আগামী ১৮ মার্চ থেকে ফের অনশন করবেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শামীম কামাল বলেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও জেলা প্রশাসক তাকে পাঠিয়েছেন রুমেলের অনশন ভঙ্গ করার জন্য। কারণ এই বিষয়টি নিয়ে গত সোমবার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সভা হয়েছে। সেখানে আলোচনা হয়েছে অচিরেই এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে। বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে বিরোধে স্টেডিয়ামের মূল মালিক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কাছে স্টেডিয়ামটি হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। গত বৃহস্পতিবার এনএসসি সচিব বরাবর পাঠানো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। ওই দিনই শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে কর্মরত বিসিবির ১৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বগুড়া থেকে প্রত্যাহার করে মিরপুরে বিসিবির কার্যালয়ে রিপোর্ট করতে বলা হয়। এ ছাড়া স্টেডিয়ামে থাকা রোলার, সুপার সপার, পিচ কাভারসহ মাঠ ও খেলার যাবতীয় সরঞ্জাম এবং ড্রেসিংরুমের আসবাব ঢাকায় নিয়ে গেছে বিসিবি। এ ঘটনার পর বগুড়া খেলোয়াড়, দর্শক ও ক্রীড়াসংগঠকসহ সাধারণ মানুষ বিসিবির এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।
২০০৬ সালের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ভেন্যুর মর্যাদা পায় বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম। পরের মাসেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেকও হয়ে যায় ওই সময়ে দেশের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন স্টেডিয়ামটির। কিন্তু ওই বছরেরই ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসনে চলে যায় স্টেডিয়ামটি। ২০০৬ সালের পর থেকে এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ না হলেও জাতীয় লীগ, যুব ক্রিকেট লিগ, প্রিমিয়ার ও প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ এবং কর্পোরেট লিগের ম্যাচ হয়েছে এ মাঠে। এ ছাড়া হয়েছে জাতীয় দলের অনুশীলন ক্যাম্পও।