মহাস্থান নিউজ:
ইরানের কয়েক ডজন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিষাক্ত গ্যাসের ব্যবহারে শত শত শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে সারাদেশে রাজপথে নেমে এসেছে অভিভাবকরা। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এই কর্মকাণ্ডে ‘বিদেশি শক্তি’ জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন পর্যন্ত এ ধরনের আক্রমণের কোনো কারণ পাওয়া যায়নি। তবে শতাধিক শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ইরানি কর্তৃপক্ষ বিষাক্ত গ্যাসের ব্যবহারকে ‘বিদেশি ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করেছে। ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এতে শিক্ষার্থীরা হালকা বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়। দেশটির কিছু রাজনীতিবিদ অভিযোগ করেছেন, নারী শিক্ষার বিরোধিতাকারী উগ্র ইসলামপন্থীরা এই হামলার পেছনে থাকতে পারে। তবে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুলরেজা রাহমানি ফাজলি জানিয়েছেন, স্কুল থেকে তারা যে নমুনা সংগ্রহ করেছিল তাতে সন্দেহজনক পদার্থ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে গভীর তদন্ত চলছে। ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মাঠ তদন্তে সন্দেহজনক নমুনা পাওয়া গেছে, যা শিক্ষার্থীদের অসুস্থতার কারণ শনাক্ত করতে পরীক্ষা করা হচ্ছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
শনিবার (৪ মার্চ) ইরানের ৩১টি প্রদেশের অন্তত ১০টিতে ৩০টিরও বেশি বিদ্যালয়ে বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ভিডিওগুলিতে দেখা যাচ্ছে, অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্কুলের সামনে জড়ো হচ্ছেন এবং কিছু শিক্ষার্থীকে অ্যাম্বুলেন্স বা বাসে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এদিকে, শিক্ষার্থীদের অসুস্থতার প্রতিবাদে শনিবার পশ্চিম তেহরানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ভবনের বাইরে অভিভাবকদের একটি সমাবেশ সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সরকার ও দেশের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।
কেউ কেউ ইরানের বিপ্লবী গার্ড, বাসিজ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী বাহিনীকে সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসআইএসের সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, ‘বাসিজ, গার্ডস, তোমরা আমাদের আইএসআইএস।’ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ ছাড়াও রাজধানী তেহরানের আরও দুইটি স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। এছাড়া ইসফাহান ও রাশতেও সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। এদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট বিদেশিদের বিরুদ্ধে বিষ প্রয়োগে ইন্ধন যোগানোর অভিযোগ করেছেন। শুক্রবার (০৩ মার্চ) দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক বক্তৃতায় তিনি দাবি করেন, বিষ প্রয়োগে জড়িতরা ইরানের শত্রু।
তিনি জানান, দেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টির জন্য এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। তবে কারা এই শত্রু সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি রাইসি। ধারণা করা হচ্ছে, এই অভিযোগের তীর যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দিকে।