মহাস্থান নিউজ:
পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানি) সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় আরও একজন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে সংঘর্ষে দুজন মারা গেলেন। সংঘর্ষের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার রাত ১২টায় কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের সালানা জলসার মিডিয়া সেলের মাহমুদ আহম্মেদ সুমন জানান, সংঘর্ষে তাদের সম্প্রদায়ের একজন নিহত হয়েছেন। তার নাম জাহিদ হাসান। ২২ বছর বয়সী এ যুবকের বাড়ি নাটোর জেলার বনপাড়া এলাকায়।
জেলার পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা জানান, শনিবার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গভীর রাতে কাদিয়ানিদের বাসে করে জেলার বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সহিংসতা, লুটপাট, গাড়ি ভাঙচুর, সরকারি অফিস ভাঙচুরসহ পুলিশের ওপর হামলার বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে শুক্রবার জুমার নামাজের পর পৌরসভা এলাকার কয়েকটি মসজিদ থেকে বিক্ষোভকারীরা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। পরে মিছিলটি আহাম্মদনগর এলাকায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জলসার দিকে রওনা হয়।
ওই সময় চৌরঙ্গি মোড় এলাকায় পুলিশ মিছিলটি আটকে দেয়। এরপর পুলিশের সঙ্গে তাদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়।
বিক্ষোভকারীদের দমাতে রাবার বুলেট, টিয়ারশেল এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। ওই সময় জেলা শহরের সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। শহরের বেশ কিছু বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সন্ধ্যার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বাড়লে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। সংঘর্ষ চলাকালে শহরের উপকণ্ঠে আহম্মদনগর এলাকায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের অন্তত ২০ থেকে ২৫টি বাড়িঘর ও জেলা শহরের চারটি দোকানের মালামাল বের করে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। ওই সময় ৯ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। শুক্রবার দুপুরে শহরের এ ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
নিহত ২৭ বছর বয়সী আরিফুর রহমান শহরের মসজিদপাড়া এলাকার ফরমান আলীর ছেলে।