পেকুয়া,কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ কক্সবাজারের পেকুয়ায় ফসলি জমির বিল থেকে হাত-পায়ের রগকাটা উদ্ধার হওয়া নারী মোহছেনা আক্তার (৩৮) হত্যাকান্ড নিয়ে নানা রহস্য দেখা দিয়েছে।তবে নিহতের স্বজনদের অভিযোগের তীর দ্বিতীয় স্বামীর দিকে। কেন তাকে নৃশংসভাবে খুন করলো তা নিয়ে চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষণ।
নিহতের ছেলে আরিফুল ইসলামের দাবি,গতকাল সোমবার মুঠোফোনে কথা বলে বাসা থেকে বের হন মা।পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে মাকে ডেকে নিয়ে বিক পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে সৎ বাবা রিদুয়ান।
আরিফ বলেন,আমার বাবা মালেশিয়ায় থাকতো। এক বছর আগে বাবা সেখানে মারা যান। রিদুওয়ানও মালয়েশিয়া থাকতো। বাবার সঙ্গে মালেশিয়ায় পরিচয় হয় তার। রিদুওয়ান দেশে আসলে পরিচয়ের সুত্র ধরে কক্সবাজার বাসায় আসা যাওয়া করতেন। চকরিয়া উপজেলা কোনাখালীর রিদুয়ানের। ৭/৮ মাস আগে মায়ের সঙে রিদুওয়ানের বিয়ে হয়। কিন্তু মা কখনো রিদুওয়ানের বাড়িতে যায়নি। শহরের খাজামঞ্জিল এলাকায় এসে মাঝেমধ্যে আমাদের সাথে থাকতো সে।
রিদুওয়ান চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের দক্ষিন কোনাখালী আব্দুল হাকিম পাড়া এলাকার নুরুল আলমের ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, রিদুওয়ান এর আগেও একটি বিয়ে করে স্ত্রীর অজান্তে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাড়ি জমায়। যৌতুকের জন্য রিদুওয়ান,তার পিতা নুরুল আলম ও মাতা মিলে তার স্ত্রীকে কয়েক দফা শারীরিক নির্যাতন করে। গরুর ব্যবসা শুরু করার কথা বলে শ্বশুরবাড়ি থেকে কয়েকদফা যৌতুক নেয়। কিছুদিন গরুর ব্যবসাও করেছে সে।
শেষবারে বিপুল পরিমান টাকা নিয়ে গোপনে বিদেশ চলে যায়। বিদেশ গিয়ে সে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। বিদেশ থাকাকালীন তার স্ত্রীকে ডিভোর্স দেয়। কয়েক বছর আগে সে দেশে ফিরে একটি মেয়েকে বিয়ে করে। পরকীয়ায় থাকাকালীন ওই মেয়ের কাছ থেকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মোটাংকের টাকাও হাতিয়ে নিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে সদরের মেহেরনামা নুইন্যামুইন্যা ব্রীজ সংলগ্ন বিল থেকে হাত-পায়ের রগকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ছুরিকাঘাত করে তার নাড়িভুড়ি বের করে ঘাতকরা। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। এ সময় পুলিশ লাশের পাশে একটি ব্যাগ,জুতা, একটি ছোরা, ব্যাগের ভেতর থাকা কিছু টাকা, আইডিকার্ড ও মোবাইল উদ্ধার করে। আইডি কার্ডে মোহছেনা আক্তার, পিতা ছাবের আহমদ,সাং- খাজামঞ্জিল,কক্সবাজার সদর লেখা রয়েছে। নিহতের স্বজনদের দাবি,টাকার দ্বন্ধ নিয়ে মোহছেনাকে খুন করেছে।
পেকুয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, সিআইডির টিম আলামত সংগ্রহ করার পর মরদেহ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার ক্লু উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।