আবুহুমাইর হোছেন বাপ্পি,কক্সবাজার প্রতিনিধি।
সামাজিকতা রক্ষায় দু’বড়বোন নিয়ে আত্মীয়ের বিয়েতে অংশ নিতে বেরিয়েছিলেন আইনজীবী সহকারি শফিকুর রহমান। কিন্তু কমিউনিটি সেন্টারে পৌঁছানোর আগেই ঘাতক বাস তাদের সিএনজিকে চাপা দিয়ে কেড়ে নিয়েছে এক বোনসহ চালকের প্রাণ।
মুমূর্ষাবস্থা পড়েছেন শফিকসহ অপর বোন তছলিমা।
কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁওয়ের চান্দের ঘোনা সাতঘরিয়াপাড়া এলাকায় শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে এ দূর্ঘটনা ঘটেছে। দূর্ঘটনার পর মহাসড়কে কয়েক ঘন্টা উভয়পাশে অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে।
রাস্তা পারাপাররত অন্ধকে বাঁচাতে রং সাইডে গিয়ে যাত্রীবাহী পূর্বাণী বাসটির চাপায় সিএনজিকে দুমড়ে মুচড়ে গিয়ে বাসের ভেতর ঢুকে দুটি একসাথে রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। এ ঘটনায় বাসেরও অনেক যাত্রি আহত হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে জানিয়েছেন ঈদগাঁও থানার ওসি মো. আবদুল হালিম।
নিহতরা হলেন সিএনজি যাত্রি চকরিয়ার খুটাখালীর ৬ নং ওয়ার্ডের পূর্বপাড়ার মৃত আমির হামজার মেয়ে স্বামী পরিত্যাক্তা ছেনোয়ারা বেগম (৩৮) ও ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাককুম পাড়ার জাফর আলমের ছেলে সিএনজি চালক মুহাম্মদ জিসান (২২)।
সিএনজির অপর যাত্রি আহত আইনজীবী সহকারি শফিকুর রহমান (৩০) ও তসলিমা আকতার (৩২)কে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা নিহত ছেনোয়ারার ছোট ভাই-বোন। তাদের অবস্থাও আশংকাজনক বলে উল্লেখ করেছেন ঈদগাঁও থানার ওসি আবদুল হালিম।
প্রত্যক্ষদর্শী মিছবাহ উদ্দিন, সুরুত আলম ও জাহাঙ্গীর সম্রাট জানান, বিকাল ৪টার দিকে সাতঘরিয়াপাড়া এলাকায় এক প্রতিবন্ধি অন্ধ ব্যক্তি অকস্মাৎ রাস্তা পার হচ্ছিলেন। তাকে বাঁচাতে গিয়ে চট্টগ্রামমূখী পূরবী পরিবহনের একটি বাস রং সাইডে গিয়ে কক্সবাজার অভিমুখী সিএনজিকে চাপা দেয়। দুটি গাড়িই দ্রুত গতি থাকায় সংঘর্ষে সিএনজিটি দুমড়ে-মুচড়ে বাসের ভেতর ঢুকে গিয়ে দুটি গাড়ি এস সাথে খাদে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলে মারা যান চালক ও এক নারী।
খুটাখালীর ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার নুর মোহাম্মদ পেটান নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, কক্সবাজার আদালতের আইনজীবী সহকারি শফিকুর রহমান তার বড়বোন ছেনোয়ারা ও তসলিমা আকতারকে নিয়ে রামুতে বিয়েতে যাচ্ছিলেন। এলাকার সিএনজি চালক জিসানকে আসা-যাওয়ার জন্য ভাড়া করে রওয়ানা দেয়ার পর মাঝপথে দূর্ঘটনার শিকার হন। ছেনোয়রা মারা গেলেও মূমুর্ষাবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন শফিক, তসলিমা। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় শফিকুর রহমানকে রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে।
রামু হাইওয়ে থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা এসআই মুজিবুর রহমান জানান, ঘবর পেয়ে দুর্ঘটনা স্থলে যায় পুলিশ। উদ্ধার তৎপরতায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিস। পরে অন্য গাড়ির সাহায্যে বাস ও দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া সিএনজিটি উদ্ধার করে হাইওয়ে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়।