ভ্যাটে কুমিল্লায় লকডাউন-শোডাউন জীবন যাপনের! সাফল্য উদযাপনের! বন্ধু হাবিব বলে, পণ্য উৎকৃষ্ট হলেও ‘প্রচার না করা’ মানে ‘অন্ধকারে বসে মিষ্টি হাসা’। শত ঈর্ষা থেকে একটি অনুপ্রেরণার শক্তি অধিক। হেটার মেটার নয়– কাজে প্রাণিত অনুগামীরাও বলেছে। তবু গত সাত মাস ‘কুমিল্লার রিটার্ন সেরা’ নিয়ে লেখিনি। ঈর্ষার বিরুপ অপকথন দহনে হয়তো! তাই ট্রিপল হ্যাটট্রিক সেরা হবার দু’সপ্তাহ পরেও লেখা হয়ে ওঠেনি। লেখক বন্ধু যুগ্মসচিব, হাবিব Habibul Islam ধন্যবাদার্হ! পুনশ্চ: আমার বড় পোস্টের অধিকাংশই সফরে ফ্লাইটে ও গাড়িতে বসে লেখা। সাফল্য ঘটেনা, ঘটাতে হয়— কুমিল্লা টীম বিশ্বাস করে! পরিশ্রমে অর্জিত হয়। অনায়াসে নয়, লেগে থাকতে হয়। সাফল্যের পিপাসু হতে হয়। নিবেদিত সাধনায় করোনাকালও পরাভুত হয়। তখন শক্তিমানের ঈর্ষাও স্পন্দনময়। এক তৃতীয়াংশ জনবল দিয়েও হয়। এপ্রিলের অনলাইন রিটার্ন জমায় রোমাঞ্চকর ট্রিপল হ্যাটট্রিক জয়। কেবল ভ্যাট রিটার্ন জমায় ‘নয়’ বারেই শেষ নয়, এ মাসেই ‘প্রবাসী রেমিট্যান্স জমায়’ কুমিল্লা জেলা টানা চার বার প্রথম হয়। শিরোণাম প্রসঙ্গে আসি! ‘মে ২০২১’ কুমিল্লায় ভ্যাটের অবিস্মরণীয় শোডাউন! ‘ট্রিপল হ্যাটট্রিক’ পথের শুরুটা জুলাই’২০২০এ। অতিমারি, লকডাউন যেখানে নিরন্তর বাধা। তবু, অসাধারণ অর্জন গত দশ মাসে কুমিল্লার কৃতীদের:
আগস্টে সর্বপ্রথম অনলাইন রিটার্ন জমায় সেবা।
সেপ্টম্বরে রেকর্ড ১৫৪% রাজস্ব প্রবৃদ্ধি।
অক্টোবরে অনলাইন রিটার্ন জমায় হ্যাটট্রিক সেবা।
ছয় জেলায় নয় শতাধিক নিবারক অভিযান
৪১টি সাপ্তাহিক জুম রাজস্ব ও প্রশিক্ষণ সভা
সেরা কর্মীদের জন্য চারটি স্বীকৃতি-পুরস্কার অনুষ্ঠান
সেরা করদাতাদের জন্য পুরস্কার ও সম্মাননা অনুষ্ঠান
আধুনিক সাজে ও সাইনেজে অফিস ও ভবন
কুমিল্লার সর্ববৃহৎ ফেনসিডিল চালান আটক
পৃথক মেজবানি ও ইফতার অনুষ্ঠান
সপ্তাহিক সেরা কর্মকর্তার কফি উইথ কমিশনার
সর্বশেষ অনলাইন রিটার্ন জমায় ট্রিপল হ্যাটট্রিক সেরা। আরো বহু পরিশ্রমের প্রাপ্তি! মহামারীতে টীমের নৈতিক মনোবল ধরে রাখা কঠিন! এ সময়ে করদাতার সংরক্ষণে থাকা রিটার্ন জমা আরো কঠিন। ‘কঠিন’ ভালোবেসে লেগে থেকে ধারাবাহিক রেকর্ড। অসামান্য সংযোজন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অগ্রাধিকার এজেন্ডায়। সরকারের ডিজিটাল অগ্রযাত্রায়। বন্ধুর এ পথে দীর্ঘসময় সফল অসংখ্য জুনিয়র সিনিয়র সহকর্মী কুমিল্লা টীমকে উদ্দীপিত করেছেন। যশোরের পরিশ্রমী টীম প্রথম থেকেই ভালো করেছে, আমাদের প্রেরণা যুগিয়েছে। গত জানুয়ারি/২০২০ কুমিল্লার এ-হার ছিল: ১৮.৮৭%, অবস্থান নিচের দিকে। জুন/২০এ চতুর্থ। কুমিল্লা ভ্যাট টীম অদম্য দুর্জয়, অপ্রতিদ্বন্দ্বী পরিশ্রমে প্রতিদ্বন্দ্বী ফলাফল আনে। অর্থ, যেমন অর্থ আনে, সাফল্য তেমনি সাফল্য! গত দশ মাসে ওরা তাই করে দেখিয়েছে। গত জুলাইতে কুমিল্লায় যোগ দিয়ে জুম সভায় টীমকে ‘সেরা হবার’ ডাক দেই। পরের মাসেই(আগস্ট) চুড়ায়। বাকীটা ইতিহাস….. এপ্রিল থ্রিল:
১. টানা লকডাউন চক্করে জেলা শহরগুলো। ঈদ ও ছুটির ফাঁদে গোটা দেশ। চারদিকে শুনশান নীরবতা। ১৪’মে ঈদ; ১৫’মে রাত ১২টায় সময় শেষ। রিটার্ন জমায় নানামুখী নৈর্ব্যক্তিক বাধা।
২. ট্রিপল হ্যাটট্রিককের লোভনীয় হাতছানি! দুশিচিন্তায় গোটা টীম। মার্চ মাসে কোনমতে কুমিল্লার মান রক্ষা হয়। এপ্রিলের ভাগ্য নিয়ে টীম বেশ চিন্তায়।
গত নয় মাসের নির্ঘুম রজনীর কতো গল্প! মহামারীতে গল্পের নিত্যনতুন মাত্রা। একবার না পারিলে দেখ শতবার। কিন্তু এবার যেন হিসেব বদলে যায় যায়
৩. এপ্রিল-মে জুড়ে রমযান, ব্যবসামন্দা, শেষদিকের ব্যস্ততা, ঈদের আয়োজন, ইত্যাদি মিলে বড় চ্যালেঞ্জ ,অনলাইন রিটার্নের তথ্য উপাত্ত পাওয়া কঠিন। কুমিল্লা নোয়াখালীর মানুষ এমনিই বেশী ধর্মপ্রাণ। ব্যবসায়ীদের মনোযোগও বেচাকেনায়। তাঁদের কর্মচারীরাও ব্যস্ত। ৪. কিভাবে অনলাইন রিটার্ন দাখিল সফল করা যায় ঈদের ছুটির আগের দিন কমিশনারের কক্ষে মিটিং করে কর্মকর্তাদের মধ্যে কাজ ভাগ করে দেয়া হয়। অনেক কর্মকর্তা স্বেচছায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি নিলেন না। কেউ কেউ ছুটি নিয়েও ছুটি বাতিল করে অফিসে ফিরলেন। লক্ষ্য, কুমিল্লা ভ্যাট টিমকে নবমবারের এর মত চ্যাম্পিয়ন করা। ৫. অনলাইন রিটার্ন দাখিলের কাজ টীমের অগ্রাধিকার। আছে অন্যবিধ বৈরিতা। ডিজিটাল কাজে ডিজিটাল বৈরিতাও। রিটার্ন জমার সময় সার্ভারে ত্রুটি, ড্রপবক্স সমস্যা, ধীরগতির ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ ভোগান্তি। ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও তথ্য উপাত্ত নিয়ে অফিসে পারছিলেন না। দমে থাকেনি কুমিল্লা কমিশনারেটের কর্মঅন্তপ্রাণ পরিশ্রমী কর্মীরা! আনকোরা এ সাফল্যে যাঁদের অকৃপন অবদান: – মাননীয় চেয়ারম্যান, এনবিআর, আবু হেনা মো: রাহমাতুল মুনিম— যিনি বলেছেন শোক নয়, শক্তি ও কর্মের মুজিববর্ষ চাই, মনের জোরে মহামারী জয় করতে চাই; – সম্মানিত প্রাক্তন সদস্য, (ভ্যাট-বাস্তবায়ন) জামাল হোসেন— Jamal Rangon যিনি বলেছেন, ‘তোমাকে দিয়ে ভ্যাটের মাঠে বিপ্লব চাই, তাই হয়েছে এনবিআরের রিটার্ন জমার হার জুলাইয়ে ২৩ থেকে এপ্রিলে ৪৩%; – কমিশনার, যশোর জাকির হোসেন— Zakir Hossain শুরুটা তুমি করায় গণমাধ্যমে রিটার্ন কর্মকান্ড প্রশংসিত, আজ কুমিল্লা, এনবিআর গর্ব করে; – কুমিল্লার কীর্তিমান এডিসি আব্দুল হাকিমের Mohammed Abdul Hakim নেতৃত্বে জেসি মুশফিকুর রহমান, এসি ছালাউদ্দিন রিপন , ডিসি ফখরুল আমিন , ফখরুদ্দিন বদলি পদায়িত ডিসি তপন চক্রবর্তী , উত্তম বিশ্বাস , ইরাজ ইশতিয়াক , কুমিল্লার নিবেদিতপ্রাণ সকল আরও, এআরও ও সকল কর্মচারী এবং – বৃহত্তর কুমিল্লা নোয়খালীর ছয় জেলার ডিজিটালি অগ্রসর করদাতা ও দেশের সকল পাঠক, সমর্থক, ফেসবুকসহ সামাজিক ও অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমের সহগামী সকল অংশীজন; – অনলাইন, অফলাইন, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধি, যারা নিরন্তর সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষভাবে প্রতিমাসে সবার আগে রিপোর্ট প্রকাশে দৈনিক শেয়ার বিজ! মহামারী অনিবার্য! দেড় বছর ধরে আছে, হয়তো আরো থাকছে। আমাদের টিকে থাকতে হবে।