ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার একটি ভোটকেন্দ্রে পেট্রল দিয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ভোরে চর সাহাভিকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ভবনে আগুন দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুর রহমান আজাদ নামে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
এদিকে ওই আগুনে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনের আসবাবপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে যায়। তবে আগুন লাগার আধ ঘণ্টার মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে ওই বিদ্যালয়টিতে। আগুনে কেন্দ্রের একটি কক্ষের আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। তবে যেখানে আগুন লেগেছে সেখানে নির্বাচনের কোনো বুথ রাখা হয়নি বলে জানা গেছে। এ ছাড়া সেখানে এখন পর্যন্ত কোনো নির্বাচনী সরঞ্জামাদিও পৌঁছায়নি।
উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের কেরামতিয়া বাজার সংলগ্ন চরসাহাভিকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ও অফিস সহকারীর কক্ষে ভোরে পেট্রল দিয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে অফিস কক্ষের ২টি কম্পিউটার পুড়ে যায়, ৭টি আলমিরার মধ্যে ২টি আলমিরার শতভাগ পুড়ে যায়, ৫টি আলমারির কাগজপত্র পুড়ে যায়। এ ছাড়া ২০টি চেয়ার, ২টি টেবিল, ২টি দরজা ও লাইব্রেরির বইসমূহ পুড়ে যায়।
সরেজমিন শুক্রবার ভোরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিদ্যালয়ের পেছনে অফিস কক্ষের জানালার পাশে দুই লিটারের একটি পানির বোতলে পেট্রল পড়ে থাকতে দেখা যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুর রহমান আজাদ জানান, গত দুদিন ধরে ভোর থেকে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজ করতে বিদ্যালয়ে আসেন তিনি। আজ ভোরে বিদ্যালয়ে এসে দেখেন অফিস কক্ষে আগুন জ্বলছে। তিনি তখন নজরুল ইসলাম নামে স্থানীয় একজনকে ডাকেন। নজরুল ইসলাম ৯৯৯ এ ফোন করে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ের সভাপতি ডা. আব্দুল হক ও প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবদিনের দ্বন্দ্বের জেরে ওদের মধ্যে কেউ আগুন লাগাতে পারে। বিদ্যালয়ের আলমিরাতে থাকা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে ফেললে তাদের অনেক সুবিধা হবে এ জন্য।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. খায়রুল্লাহ জানান, আগুনের খবর পেয়ে তিনি বিদ্যালয়ে আসেন। অফিস কক্ষের আসবাবপত্র সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আলমারিতে থাকা বিদ্যালয়ের গত ২০ বছরের কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়েছে। যে আলমারিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিল ওইটা শতভাগ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি সুদ্বীপ রায় পলাশ আগুনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিদ্যালয়ের সভাপতি-প্রধান শিক্ষকের দ্বন্দ্ব থেকে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্কুলের ডকুমেন্ট পোড়ানোর জন্য আগুন দেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সেখানে এখনো কোনো নির্বাচনী সরঞ্জামাদি পৌঁছায়নি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগুনের ঘটনা ঘটেছে কি না সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুর রহমান আজাদ নামে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।