দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর (ঈগল) সমর্থক হওয়ার কারণে কয়েকজন সুবিধাভোগীর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড জব্দ করার অভিযোগ উঠেছে হরিণাকুন্ডুর জোড়াদাহ ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়ার বিরুদ্ধে। ওই কার্ড তিনি সুবিধাভোগীদের নিকট থেকে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে নিয়ে এনে নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ -২ (সদর-হরিণাকুন্ডু) আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি। এ ছাড়াও আসনটিতে ‘ঈগল’ প্রতীক নিয়ে নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুলসহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আরও ১০ জন প্রার্থী।
জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জোড়াদাহ ইউনিয়নে নৌকার পক্ষে কাজ করছেন। তবে তাহজীব আলম সিদ্দিকী দীর্ঘদিন ধরে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও নানা ব্যর্থতার কারণে জোড়াদাহ ইউনিয়নে তার অবস্থা বেশ নাজুক। ওই ইউনিয়নে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদীর ঈগল। ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বিভিন্ন চেষ্টা তদবির করেও পরিস্থিতির উন্নতি করতে না পারায় ওই ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের লাড্ডু ইসলাম, হানেফ আলী, হাসেন আলী, জোড়াদাহ গ্রামের ফারুক হোসেনসহ ‘ঈগল’ প্রতীকের বেশ কয়েকজন কর্মীর নিকট থেকে ‘মা ও শিশু সহায়তা ভাতা’ কার্ড ও টিসিবি’র কার্ড কেড়ে নেওয়াসহ তাদের সঙ্গে একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে চলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সর্বশেষ গত সোমবার (১ জানুয়ারি) সকালে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ মানিক আলীর মাধ্যমে তিনি জোড়াদাহ গ্রামের ঈগল প্রতীকের সমর্থক লিটু মালিতার স্ত্রী আফরোজা খাতুনের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড এনে জব্দ করে। দুপুরের দিকে আফরোজা খাতুন কার্ডের বিষয় নিয়ে কথা বলতে গেলে চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম তার স্বামীকে ঈগল প্রতীক ছেড়ে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বলেন। এ সময় এ সুবিধাভোগীর সঙ্গে তিনি দুর্ব্যবহার করেন বলে জানা যায়। একইভাবে ভেড়াখালী গ্রামের লালচাঁদ আলীর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডও তিনি জব্দ করে নিজের কাছে রাখেন।
কার্ডের সুবিধাভোগী আফরোজা খাতুন জানান, গ্রাম পুলিশ এসে আমার কাছে খাদ্যের কার্ড চেয়েছিল। বলল চেয়ারম্যান নিতে বলছে, চাল আসা পর্যন্ত চেয়ারম্যানের কাছে জমা থাকবে। আমি পরে পরিষদে গেলে চেয়ারম্যান আমাকে বলে, কার্ড নিতে হলে তোমার স্বামীকে আসতে হবে। তাকে ঈগল পাখি মার্কার ভোট করতে নিষেধ কর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি কারো কার্ড জব্দ করিনি। চাল না নিয়েই হয়তো কেউ কার্ড রেখে যেতে পারে। আমি এখন কোর্টে আছি। পরিষদে না গিয়ে বিস্তারিত বলতে পারব না।
জানতে চাইলে হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকতার হোসেন বলেন, এমন কোনো অভিযোগ এখনো আমি পাইনি। তবে একজন চেয়ারম্যান এভাবে সরকারি সুবিধাভোগী কারও কার্ড জব্দ করতে পারে না। বিষয়টি সম্পর্কে খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।