ফেনীতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হয়েই চলেছে। সর্বশেষ গতকাল সোমবার রাতে সদর মডেল থানায় নাশকতা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলার বাদী সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেন। এই মামলায় বিএনপির ছয় নেতা-কর্মী ও অজ্ঞাত সাত-আটজনকে আসামি করা হয়েছে। আরেকটি মামলার বাদী ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই প্রতুল দাস।
এ দুটি পৃথক মামলায় পুলিশ যুবদল নেতা মো. ইকবাল হোসেন ও ছাত্রদল নেতা মো. সালমান ফারসিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের কাছ থেকে গাড়ির টায়ার, পেট্রলবোমা, লোহার অ্যাঙ্গেলসহ নাশকতার জিনিসপত্র পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ নিয়ে ২৮ অক্টোবরের পর থেকে গত ৩৭ দিনে (সোমবার পর্যন্ত) বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ফেনীর বিভিন্ন থানায় ২৫টি নাশকতার মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি মামলার বাদী হয়েছে পুলিশ। পাঁচটি মামলার বাদী হয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা, একটি মামলার বাদী একজন ট্রাকমালিক। পুলিশ সূত্র জানায়, এই সময়কালে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৭৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ১৭১ জন এবং জামায়াত-শিবিরের ৮ জন কর্মী রয়েছেন।
ফেনী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গতকাল সকালে বিএনপির নেতা-কর্মীরা অবরোধের নামে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল এলাকায় এবং ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লাহর কায়সার সড়কে যানবাহন চলাচলে বাধা দেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছে।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাল উদ্দিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসব মামলা রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে করা। পুলিশ নিজেরা অতি উৎসাহী হয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হয়রানি ও নীলনকশার একতরফা নির্বাচন সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে এসব গায়েবি মামলা করে বিএনপিকে মাঠছাড়া করার চেষ্টা করছে। নেতা-কর্মীরা বাড়িঘরে থাকতে পারছেন না।’
ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব পালন করেছে পুলিশ। ক্ষতিকর কাজে লিপ্ত থাকলে পুলিশ কাউকে ছাড় দেবে না। তিনি জানান, যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত থাকবে।