মহাস্থান নিউজ:
দেশের ১৭তম জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল নাটোরের কাঁচাগোল্লা। গত ৮ আগস্ট শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানের সইয়ে নাটোর জেলা প্রশাসকের নামে কাঁচাগোল্লার জিআই স্বীকৃতি অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রায় ২৬৩ বছর পর সুস্বাদু মিষ্টান্ন কাঁচাগোল্লার ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) নিবন্ধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন নাটোরের সাবেক ও রাজশাহীর বর্তমান জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। গত ৩০ মার্চ এফিডেভিটের মাধ্যমে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের (ডিপিডিটি) মাধ্যমে কাঁচাগোল্লার জিআই আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
কাঁচাগোল্লাকে নাটোর জেলার নিজস্ব মিষ্টি হিসেবে নিবন্ধ দেয়ায় শহরবাসীও খুশি। সঞ্জিতা পাল নামে একজন বলেন, ‘কাঁচাগোল্লা এখন শুধু আমাদের পণ্য। এটাকে কেউ যেন বিকৃতি করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখত হবে।’
নাটোরের বিখ্যাত কাঁচাগোল্লাকে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে নিবন্ধন দেয়ায় খুশি ব্যবসায়ীরাও। শিলা মিষ্টিবাড়ির মালিক মুকুল হোসেন বলেন, এটি নাটোরবাসীর সবচেয়ে বড় পাওয়া। এখন এটার মান ও গুণগত দিকটা খেয়াল রাখতে হবে।
নাটোরের জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা বলেন, কাঁচাগোল্লা জেলা প্রশাসকের নামে নিবন্ধন হয়েছে। এখন এটাকে বিকৃত করতে দেয়া হবে না।
কাঁচাগোল্লার প্রস্তুত প্রণালি
গরুর দুধ ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা প্রক্রিয়া করে তৈরি হয় কাঁচাগোল্লা। সকাল থেকে নাটোর শহরের মিষ্টির দোকানগুলোর কারখানায় কাঁচাগোল্লা প্রস্তুতের প্রক্রিয়া শুরু হয়। মিষ্টি তৈরির কারখানায় আসা দুধ ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট চুলায় জ্বাল দিয়ে তৈরি হয় ছানা। ৮-১০ ঘণ্টা ছানা শুকিয়ে মাঝরাতে শুরু হয় কাঁচাগোল্লা তৈরি। ৭ কেজি ছানা ও ৩ কেজি চিনি ২০ থেকে ২৫ মিনিট জ্বাল দিয়ে তৈরি হয় কাঁচাগোল্লা। শুধু দুধ ও চিনি দিয়ে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টার প্রক্রিয়া শেষে তৈরি হয় নাটোরের বিখ্যাত কাঁচাগোল্লা।
জেলা প্রশাসনের তথ্য বাতায়নে বলা হয়েছে, প্রায় ২৫০ বছর আগে শহরের লালবাজারে মধুসূদনের মিষ্টির দোকানের কারিগর না আসায় তার দোকানে থাকা ছানা নিয়ে বিপাকে পড়েন। ছানাগুলো রক্ষায় চিনির রস ঢেলে জ্বাল দেন। চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে তিনি সেটা নিজেই খেয়ে পরীক্ষা করেন। চমৎকার স্বাদ পেয়ে নাম দেন কাঁচাগোল্লা।