মহাস্থান নিউজ:
সৈয়দপুরসহ নীলফামারী জেলার প্রায় ২০০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই পর্যাপ্ত খেলার মাঠ। আর ৪০টি বিদ্যালয়ে নেই কোনো খালি জায়গা। মাঠ-সংকটে অনেকটা বন্দি হয়েই ক্লাসরুমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতে হয় শিশুদের। ফলে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা। মাঠের অভাবে বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করাও সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষকরা বলছেন, ক্লাসে পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুদের বিকাশে আছে মাঠের প্রয়োজনীয়তা।
নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌর শহরের চিনি মসজিদ এলাকায় মূল সড়ক লাগোয়া আমিনুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। মাঠ না থাকায় বিদ্যালয়টির শ্রেণিকক্ষে করানো হয় প্রাত্যহিক সমাবেশ, বন্ধ শিশুদের খেলাধুলাও। টিফিনের সময় শিক্ষার্থীদের কাটাতে হয় ক্লাশরুমেই। সৈয়দপুর পৌরসভার সামনের হিন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা আরও করুণ। শ্রেণিকক্ষের বারান্দা ছাড়া কোনো জায়গা নেই তাদের। ফলে এক রকম বন্দিদশায় চলে পাঠদান। মাঠ না থাকায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ। শুধু সৈয়দপুর নয়, জেলার ১ হাজার ৮৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২০০ বিদ্যালয়ে নেই পর্যাপ্ত খেলার মাঠ।
সৈয়দপুরের আমিনুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলার মাঠ খুব দরকার। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অন্যত্র গিয়ে করতে হয়। ক্লাসরুমেই প্রাত্যহিক সমাবেশ করাতে হয়। শিক্ষিকা সাঈয়েদা আখতার বলেন, ‘শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই। তবে সেই খেলাধুলার মাঠটি আমাদের বিদ্যালয়ে নেই। এখানে শিক্ষার্থীরা সারাদিন ক্লাসরুমে থাকছে। বাসায় গিয়ে কিন্তু তাদের আর খেলাধুলা হচ্ছে না। হয়তো মোবাইলে সময় কাটাচ্ছে। এতে মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরমান বলে, ‘আমাদের মাঠ নেই। কিন্তু অন্য স্কুলে মাঠ আছে। অন্যদের দেখলে আমাদের কষ্ট হয়। সবাই টিফিনের সময় স্কুলে খেলাধুলা করে কাটায়, আমরা পারি না। অল্প জায়গায় ফুটবল বা ক্রিকেট খেলার সময় আশপাশের বাসায় বল গেলে তারা গালমন্দ করে।’
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন সরকার বলেন, জেলার প্রায় ২০০ স্কুলে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ নেই। আমি স্কুলগুলো পরিদর্শন করেছি। যে স্কুলগুলোর জমি কম, সেগুলো পাকিস্তান আমলে স্থাপিত। আমরা শিক্ষকদের স্কুলগুলোতে ইনডোর গেম বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছি। পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করা হবে।