স্টাফ রির্পোটার: রাশেদ
শ্রাবণ মাস শুরু হলেও বৃষ্টির দেখা নেই বগুড়ায়। এদিকে তীব্র গরম আর তাপ প্রবাহে বেড়েছে ডাবের চাহিদা। তবে দাম আকাশচুম্বী নিম্ন-মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে। ছোট বা বড় সাইজের একটি ডাব খেতে চাইলেই গুনতে হচ্ছে বড় অংকের টাকা। একটি ডাব থেকে এক থেকে দেড় গ্লাস পানি হয়। আকারভেদে এসব ডাব প্রতি পিস ১০০-১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই ডাব কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা। সারাদিন গরমে অতিষ্ঠ হয়ে মানুষ চাইছেন একটু তৃষ্ণা মেটাতে। তাই কর্মব্যস্ত জীবনে কাঠফাটা রোদে তৃষ্ণা মেটাতে পানি, ফলের রস ও কোমল পানীয়র পাশাপাশি এখন ডাবের চাহিদা তুঙ্গে। ওষ্ঠাগত প্রাণে শান্তি যোগাতে প্রাকৃতিক পানীয় ডাবের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় সরবরাহে ঘাটতি থাকায় বেড়েছে ডাবের দাম। চলমান তাপপ্রবাহে ডাবের দাম এখন আকাশচুম্বী। তাই সাধারণ মানুষ এখন ডাব কিনতে সাহস পাচ্ছে না। প্রাকৃতিক পানীয় হিসেবে তো বটেই, রোগীর পথ্য হিসেবেও ডাবের বেশ কদর রয়েছে। সেজন্য সারাবছরই ডাবের কদর লক্ষ করা গেলেও প্রকৃতিতে তাপপ্রবাহ চলাকালে এর চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এতে ডাবের চাহিদার অনুপাতে উৎপাদন ঘাতটির কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা দাম বেড়ে যায়। বিক্রেতারা বলছেন, ডাবের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। সে অনুপাতে সরবরাহ না থাকায় একটু বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই কিছুটা বেশি দামেই বিক্রি করছেন। বুধবার (২৬ জুলাই) শহরের বিভিন্ন ডাবের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, আকারভেদে প্রতি পিস ডাব ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট আকারের ডাব যেটাতে এক গ্লাসের মতো পানি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেটা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৯০ টাকায়। মাঝারি মানের ডাব যেটাতে এক গ্লাসের থেকে কিছুটা বেশি পানি রয়েছে তার দাম ৯০ থেকে ১০০ টাকা, আর একটু বড় আকারের ডাব যেটাতে দেড় থেকে দুই গালাস পানি পাওয়া যায় সে সাইজের ডাব কিনতে গেলে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। স্বাভাবিকের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় অনেকে শুধু দাম শুনেই ফিরে যাচ্ছেন। শহরের ফতেহ আলী বাজার মোড় থেকে এক জোড়া ডাব কিনেছেন ২৮০ টাকায়। তীব্র গরমের কারণে ডাবের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দোকানিরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলেও জানান মনোয়ার হক নামের এক চাকুরিজীবী। তিনি বলেন কয়েক দিন আগেও এই সাইজের একটি ডাব ৭০ টাকায় কেনা যেত। এখন দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা থেকে ডাব কিনতে আসা পিয়াল জানালেন, পাশেই হাসপাতালে রোগী দেখতে এসেছেন তিনি। রোগীর জন্য অন্য ফলমূলের সঙ্গে চারটি ডাবও কিনেছেন। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগেও মাঝারি সাইজের ডাব কিনেছি ৭০ টাকায়। এটা এখন দেখি ১২০ টাকা হয়ে গেছে। এ গরমে রোগীর জন্য ডাব খাওয়া ভালো হবে তাই নিলাম।
শহরের গালাপট্টি মোড়ের ডাব বিক্রেতা বেলাল মিয়া বলেন, আগে ডাব বিক্রি হতো রকমভেদে ৪০-৬০ টাকা পিস। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা পিস। কিচ্ছু করার নেই আমাদের। ডাবের যে চাহিদা সে তুলনায় ডাব পাচ্ছি না। ভ্রাম্যমান ডাব বিক্রেতা রুদ্র রায় বলেন, আমি শীত গরম সব মৌসুমেই উপজেলার কৃষকদের গাছের ডাব কিনে ভ্যানে করে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে থাকি। এই গরমে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পর্যাপ্ত ডাব না পাওয়ায় আড়ত থেকে একটু বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। শহরের কাঁঠালতলা এলাকার ডাব বিক্রেতা আকাশ রায় বলেন, কয়েকদিনের প্রচণ্ড দাবদাহে বাজারে ডাবের চাহিদা বেশ বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় পাইকারি দর এখন কিছুটা বেশি। তাই কিছুটা বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি জানান, প্রতি পিস ডাব ৯০-১০০ টাকা দরে কিনতে হয়। এরমধ্যে নষ্ট ও কিছু ছোট আকারের ডাবও থাকে। ১২০ থেকে আকারের বড় ডাবের দাম ১৫০ টাকায় বিক্রি করছি। এর কমে করলে লাভ থাকে না। তবে তাপমাত্রা স্বাভাবিক হলে চাহিদার সঙ্গে দামও কমে যাবে।।