মহাস্থান নিউজ:
ফ্রান্সে দাঙ্গা পরিস্থিতি অনেকটাই কমে এসেছে। সোমবার (৩ জুলাই) দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একজন পুলিশ অফিসার উত্তর আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এক কিশোরকে গুলি করে হত্যার পর ফ্রান্সজুড়ে ছড়িয়ে পড়া দাঙ্গা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রোববার (২ জুলাই) দাঙ্গার ষষ্ঠ রাতে ১৬০ জনেরও কম লোক গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশটিতে পাঁচ রাত ব্যাপক সহিংসতার পর, তুলনামূলক শান্ত পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার ঘটনা এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সরকারকে স্বস্তি এনে দিয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিক্ষোভের ঘটনায় রোববার রাতে ১৫৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার আগের রাতে ৭০০ জনের বেশি এবং শুক্রবার বিক্ষোভের চতুর্থ রাতে ১৩০০ জনের বেশি লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
গত ২৬ জুন প্যারিসের তল্লাশিচৌকিতে আলজেরিয়ান বংশোদ্ভূত নাহেল নামের ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নির্দেশনা না মেনে পালিয়ে যাওয়ার সময় ওই কিশোরকে গুলি করা হয়।
নাহেলের মৃত্যু ফ্রান্সে বর্ণবাদ এবং সংখ্যালঘু জাতি-গোষ্ঠীর মানুষের প্রতি পুলিশের বৈষম্যমূলক আচরণের ব্যাপারে ক্ষোভ উস্কে দেয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাত থেকেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে পুরো ফ্রান্স। লাগাতার বিক্ষোভে অচল হয়ে পড়ে ইউরোপের দেশটি।
দাঙ্গাকারীরা রাজধানী প্যারিসসহ ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে বহু গাড়ি পুড়িয়েছে, দোকানপাট লুটপাট করার পাশাপাশি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। তারা নগরীর টাউন হল ও পুলিশ স্টেশনগুলোকে লক্ষ্যস্থল করেছে, হামলা চালিয়েছে প্যারিসের শহরতলীর এক মেয়রের বাড়িতে যখন তার স্ত্রী ও সন্তানরা ভেতরে ঘুমিয়ে ছিলেন।
পুলিশের গুলিতে নিহত নাহেলের দাদি রোববার (২ জুলাই) সকালে দেশে দাঙ্গা-সহিংসতা বন্ধ করে সবাইকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বিএফএম টিভিকে বলেন, ‘আমরা চাই না তারা দোকান, বাস ও স্কুল ধ্বংস করুক। যারা এই মুহূর্তে আইন ভাঙছেন, ভাঙচুর চালাচ্ছেন, আমি তাদের বলছি, এটা বন্ধ করুন।’
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ৪৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করে। সহিংসতার ঘটনায় তিন জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত এবং প্রায় ৩৫০টি ভবন ও ৩০০টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।