মহাস্থান নিউজ: জামালপুরের বকশীগঞ্জে হত্যার শিকার সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার ১৭ আসামি ১৮ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি। মামলা দায়েরের পর ২২ জনের মধ্যে প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবুসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১৭ জন আসামি এখনও পলাতক রয়েছে। মামলা দায়েরের পূর্বেই ৮ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিন্তু পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ৮ জনের নামে কোনো মামলা নেই।
জানা যায়, জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরের সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম ১৪ জুন হামলার শিকার হয়ে ময়মনসিংহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ জুন মারা য়ায়। ১৮ জুন সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী বাদী হয়ে ২২ জনসহ অজ্ঞাত ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু, জাকিরুল, রেজাউল, মনিরুলসহ আসামির মধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি গোলাম কিবরিয়া সুমন। পুলিশ অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে কফিল, ফজলু মিয়া, শহী, মকবুল, ওহিদুজ্জামান, তোফাজ্জল ও আইনাল নামে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে। অথচ সে ৮ জনের নামে মামলা হয়নি।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের আদালতে সোর্পদ করে বিভিন্ন মেয়াদের রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালত ১৩ জনকেই বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবুর রিমান্ড মঞ্জুর হয় ৫ দিন। রিমান্ড শেষে সকল আসামিকে বকশীগঞ্জ থানার পুলিশ জামালপুরের আদালতে সোর্পদ করেন। আদালত তাদের কারাগারে পাঠান।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ১৮ দিন এবং মামলা দায়েরের ১৬ দিন পরেও সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার আসামি বকশীগঞ্জ উপজেলার কামালেরবার্তি গ্রামের ফাহিম ফয়সাল রিফাত(২২), নামাপাড়া গ্রামের ননির ছেলে এমডি রাকিবিল্লাহ রাকিব (২৮), আরচাকান্দির গাজী আমর আলী মেম্বার (৫৫), কাগমারীপাড়া গ্রামের সাফিজল হকের ছেলে শরীফ মিয়া (২২), মালিরচর তকিরপাড়ার আব্দুল করিমের ছেলে লিপন মিয়া (৩০), পূর্ব কামালেরবার্তী গ্রামের মফিজল হকের ছেলে মনিরুজ্জামান মনির (৩৫), নামাপাড়ার শেখ ফরিদ (৩০), টাঙ্গারীপাড়ার কামালের ছেলে ওমর ফারুক (৩২), বটতলী সাধুরপাড়ার আবুল কালামের ছেলে রুবেল মিয়া (৩৫), খেতারচর দক্ষিণপাড়ার জহুরুল হকের ছেলে সুরুজ মিয়া আইড়মারি শান্তি নগরের জলিলের ছেলে বাদশা মিয়া (৩৬), মদনেরচরের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে আবু সাঈদ (২৮), আরচাকান্দির মজিবুর রহমানের ছেলে ইমান আলী (৩৩), কুতুবের চরের সাবেক মেম্বার রফিকুল ইসলাম (৫০) ও সুর্য্যনগর গ্রামের কারিমুল মাস্টারের ছেলে আমান উল্লাহ (৩০)সহ ১৭ আসামি এখনও পলাতক রয়েছে। তারা গ্রেপ্তার হয়নি।
অপরদিকে মামলার সকল আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বকশীগঞ্জ কর্মরত সাংবাদিকরা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। বকশীগঞ্জ প্রেস ক্লাব আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর ও বকশীগঞ্জ থানার ওসির মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্বারক লিপি দিয়েছে।
এ ব্যাপারে বকশীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি এম শাহীন আল আমীন জানান, ১৭ আসামি দ্রুত গ্রেপ্তার না হলে মামলার বিচার কার্যক্রমে অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে। তাই দ্রুত বিচারের স্বার্থে পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার জরুরি।
জামালপুর টেলিভিশন রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি ফজলে এলাহি মাকাম জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারে আইন-শৃংখলা বিহিনীর যৌথ অভিযান প্রয়োজন। একক প্রচেষ্টায় আসামিদের গ্রেপ্তার করতে চাইলে দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। কিন্তু যৌথ অভিযান পরিচালনা ও প্রযুক্তির ব্যবহার করলে আশা করি স্বল্প সময়ের মধ্যেই পলাতক আসামিরা গ্রেপ্তার হতে পারে।
বকশীগঞ্জ থানার ওসি সোহেল রানা জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশক্রমে জামালপুর জেলার প্রতিটি পুলিশ সদস্য সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কোনো কাজই থেমে নেই। আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে মাঠে যৌথ বাহিনী কাজ করছে। আশা করি সফলতাও আসবে।