মহাস্থান নিউজ: রাজশাহী মহানগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ডের খুলিপাড়ায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে বদর আলীর ছেলে আলতাফ শেখের (৪৫) হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করেছে সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দুপুর ১২টার দিকে নগরীর খুলিপাড়ার মোড়ের এই নৃশংস ঘটনা ঘটে। এর আগে সন্ত্রাসীদের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে আরও তিনজন আহত হয়েছেন। এরা হলেন নগরীর খুলিপাড়া এলাকার শুকুর আলীর ছেলে মুকুল (৪৫), আনসার আলীর ছেলে মনা (২৬) ও মনিরুল ইসলামের ছেলে সজল (২৩)। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে রামেক হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য আলতাফ সেখকে ঢাকায় পাঠানোর সুপারিশ করা হলে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয়। অন্যদিকে হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করার খবর পেয়ে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারী সন্ত্রাসীরা দ্রুত পালিয়ে যায়।
হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হওয়া আলতাফ শেখের ছেলে সাকিব শেখ জানান, আমার চাচাতো ভাই মুকুলের ওপর প্রথমে হামলা করে সন্ত্রাসীরা। তাকে উদ্ধার করে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা ঘটনাস্থলে গেলে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই একই এলাকার রবিন, আজিজ, আকাই, মজিদ, হিটলার, নাইম, বাদল, মজিদ, ইয়াসির, সজীব, আমিন ও সুইটসহ ২০-২৫ জনের সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী দল ধারালো নেপালি ও চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রাসী রবিন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আমার বাবা আলতাফ সেখের এক হাতের কব্জি কেটে নিয়ে যায় এবং আরেক হাতের কয়েকটি আঙ্গুল কেটে ফেলে। বাকিরা অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মনা ও সজলকে আহত করে। আমরা নাইমের কাছে বিচ্ছিন্ন হওয়া বাবার হাতের কব্জি চাইলে না দিয়ে তারা পাশের একটি বাগানে নিয়ে হাতের কাটা কব্জিটি ফেলে দেয়। পরে ওই বাগান থেকে হাতের তুলে নিয়ে বাবা আলতাফ শেখ, চাচাতো ভাই মুকুল, মনা, সজলকে রামেক হাসপাতলে ভর্তি করা হয়।
এলাকাবাসী জানায়, গুরুতর আহত আলতাফ শেখের পরিবারের সদস্যদের সাথে প্রতিপক্ষ আজিজের অনুসারীদের এলাকার আধিপাত্য নিয়ে আগে থেকেই বিরোধ চলছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরের হামলায় জড়িতরা এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত। তাদের সঙ্গে আলতাফ শেখের পরিবারের পানি, ড্রেন, পাইপ ও চলাফেরা নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। এ বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর নিযাম উল আযিম মীমাংসার চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুরে আজিজের অনুসারীরা আলতাফের বাম হাতের কবজি পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে যায়। এছাড়াও তার ডান হাতের কয়েকটি আঙ্গুল কেটে ফেলে। আলতাফ শেখকে গুরুতর অবস্থায় রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, খুলিপাড়ার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। আরও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে বিকাল পর্যন্ত ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ করেননি।
বোয়ালিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম জানান, এই ঘটনা পূর্বশত্রুতার জেরে ঘটেছে। জড়িতদের সঙ্গে ভুক্তভোগীদের আগে থেকেই বিরোধ ছিল। একাধিকবার স্থানীয় কাউন্সিলদের নিয়ে বসে মীমাংসা করা হয়েছিল। তারপরও আজকের ঘটনা ঘটেছে।