দেশের ব্যবসায়ী সমাজ শিল্প খাতে পণ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে উচ্চমূল্যে হলেও নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ পেতে চায়, যেন স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি আমাদের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ওপর কিছুটা হলেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, কারণ এটি তাদের পণ্য উৎপাদন ব্যয় বাড়াবে।
গতকাল শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও জ্বালানি সংকটের কারণে দেশে জ্বালানির মূল্য বাড়ছে। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি কেবল একমুখী হওয়া উচিত হবে না বরং আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির মূল্য হ্রাস পেলে কালক্ষেপণ না করে, সে অনুপাতে স্থানীয় বাজারেও যেন জ্বালানির মূল্য সমন্বয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের চাহিদা ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে এ ধরনের পণ্য আমদানিতে এলসি খোলার শর্তাবলি সহজীকরণের বিষয়টি বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি রাতারাতি সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য আমাদেরকে রেমিট্যান্স আহরণ বাড়াতে প্রণোদনা বৃদ্ধি ও রপ্তানি আয় বাড়ানোর ওপর আরো বেশি হারে জোরারোপ করতে হবে।
ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সমসাময়িক অর্থনীতি বিষয়ক ১০টি বিষয়বস্তুর ওপর বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি ২০২৩ সালে ডিসিসিআইয়ের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। ডিসিসিআই সভাপতি জানান, এ বছর ঢাকা চেম্বার সিএমএসএমই, মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বেসরকারি ও বৈদেশিক বিনিয়াগ, আর্থিক খাত, কর ব্যবস্থাপনা, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন, অর্থনৈতিক কূটনীতি, অবকাঠামো ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রভৃতি বিষয় সমূহের ওপর অধিক হারে গুরুত্বারোপ করবে এবং বিষয়গুলোর ওপর ডিসিসিআই সভাপতি বিস্তারিত সুপারিশমালা উপস্থাপন করেন।
বৈশ্বিক মন্দা অবস্থার কারণে স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা এ বৈশ্বিক পরিস্থিতির বাইরে নই, ২০২৩ সালে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বিদ্যমান কর্মসংস্থানের সুযোগ ধরে রাখাটাও এক ধরনের সফলতা বলে তিনি মনে করেন। প্রতি বছর আমাদের দেশে প্রায় ২০ লাখ তরুণ শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকরি বাজারে প্রবেশ করে, তবে বিপুল এ জনগোষ্ঠীর জন্য উপযোগী কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা বেশ চ্যালেঞ্জের বিষয়। এদের অনেকেই হয়তো চাকরি পাবে, তবে অবশিষ্টদের মধ্যে একটি বড় অংশ উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলবে। তিনি বলেন, আমাদের তরুণ উদ্যোক্তারা তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে বেশ উদ্ভাবনী দক্ষতার অধিকারী। বৈশ্বিক অস্থিতিশীল বাজারে সিএমএসএমই খাতের তরুণ উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে ঋণের সহজলভ্যতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিদ্যমান জটিল পরিস্থিতিতে তাদেরকে সহজ শর্তে অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে।