ষ্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়ার শাজাহানপুরে শফিকুল ইসলাম নামে এক নিখোঁজ যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
বুধবার বেলা ১২ টার দিকে শাজাহানপুর উপজেলার শাকপালা মুন্সিপাড়া গ্রামের বাঁশবাগানের মধ্যে একটি ডোবায় তার লাশ পাওয়া যায়। এই বাগানটি নেশাগ্রস্থদের আস্তানা বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এর আগে, সোমবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।
নিহত ৩৫ বছর বয়সী শফিকুল শাকপালা গোয়ালগাড়ী গ্রামের মৃত বাচ্চু সরকারের ছেলে। পেশায় তিনি নাপিত ছিলেন। শাকপালা বন্দর এলাকায় তার সেলুন।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নেয়া দুজন হলেন- শাকপালা গোয়ালগাড়ী গ্রামের ১৯ বছর বয়সী মাসুদ ও ৩০ বছরের সুমন। আটক সুমন নিহতের আপন শ্যালক। লাশ উদ্ধারের পরপরই শাকপালা বন্দর এলাকা থেকে মাসুদকে ও গোয়ালগাড়ী গ্রাম থেকে সুমনকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, শফিকুলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাকে গলাকেটে ও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী নাসিমা বেগম জানান, সোমবার রাত থেকেই নিখোঁজ হন তার স্বামী। ওই রাতে তিনি বাড়ি ফিরে আসেননি। এরপর থেকে তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। বুধবার লোকমুখে তার লাশ উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়। তার আপন ভাই সুমনের সঙ্গে শফিকুলের দ্বন্দ্ব ছিল। তার ভাই সুমন নেশাগ্রস্থ।
তিনি আরও জানান, তার স্বামীও মাঝেমধ্যে গাঁজাসেবন করতেন। নেশার প্রলোভন দিয়ে শাকপালা মুন্সিপাড়া ওই বাঁশবাগানে তাকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এরপরে ডোবায় ফেলে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখা হয় মৃতদেহ। ওই বাগানে সব মাদকাসক্তরা আড্ডা দেন।
নিহতের শ্বশুর ও আটক সুমনের বাবা একই গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ সর্দার জানান, বুধবার সকাল থেকে স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে সুমনকে খোঁজাখুজি করা হচ্ছিল। সবাইকে গ্রামের সব স্থানেই খুঁজতে বলা হয়। এক পর্যায়ে রকি নামে আট বছর বয়সী স্থানীয় এক শিশু ডোবার কচুরিপানা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে সরাতেই ভেসে উঠে সুমনের গলাকাটা লাশ। এরপরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করে।
তিনি আরও জানান, অনেকেই সন্দেহ করছেন তার ছেলে সুমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আছে। কিন্তু এটা সঠিক না।
স্থানীয়রা জানান, শফিকুলের লাশ যেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে ওই বাগান হলো নেশাগ্রস্থদের আঁখড়া। সেখানে রাত হলেই চলে নেশার আড্ডা। শফিকুল সেলুন থেকে এসে মাঝেমধ্যে রাতে ওখানে গাঁজাসেবন করতেন। এছাড়াও সুমনসহ অন্যরা সেখানে নিয়মিত মাদক সেবন করতেন। সোমবার রাত ১১ টার দিকে শফিকুলকে সেলুন থেকে ডেকে বাঁশাবাগনে নিয়ে যাওয়া হয়। এক পর্যায়ে সেখানেই তাকে হত্যা করে লাশ ডোবায় ফেলে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। তার সঙ্গে যারা নেশা করেন তারাই তাকে হত্যা করেছেন। সুমনকে গলাকেটে ও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে।
জানতে চাইলে শাজাহানপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রউফ জানান, লাশ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কাউকে আটক করা হয়নি। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে।