মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচারের প্রতিবাদে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ঈশ্বরদী উপজেলা শাখায় বৃহস্পতিবার (০৭ এপ্রিল) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন আনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, ভাড়ইমাড়ী গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদ প্রাং এর ছেলে মোঃ প্রদিপ হোসেন। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ সৌদি আরবে কর্মরত ছিলাম। আমি আমার কোম্পানীর মাধ্যমে আমার কর্মস্থলে (সৌদি আরব) আমার এলাকার কিছু মানুষকে সৌদি আরবে নিয়ে যেতে সক্ষম হই। এমতাবস্থায় সোহেল, হাসান, রাসেল, বিদেশে কর্ম করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়, পরবর্তীতে ভাড়ইমাড়ী সরদার পাড়া এলাকার আজিবর সরদার এর ছেলে রাসেল ও একই এলাকার ডাবলু প্রাং এর ছেলে হাসান আমাকে অনুরোধ করে বলে তাদের ছোট ভাই কিরণ ও পিয়াস কে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার জন্য ।
আমি তাদের কে না বলি। পরবর্তীতে তাদের সাথে নাটোর জেলার লালপুর থানার গৌরিপুর এলাকার মৃত ইসাহক আলীর ছেলে মো সিরাজ উদ্দীন ফারুকী নামে এক ব্যক্তির পরিচয় হয়। তবে এটা আমি জানিনা। পরে আমাকে হাসান ও রাসেল মোবাইল করে বলে যে, সিরাজ উদ্দিন মানুষটি কেমন। তখন আমি ব্যাক্তিগত ভাবে উত্তরে বলি মানুষটি আমার কাছে ভালো। পরবর্তীতে রাসেল ও হাসান আমাকে অনুরোধ করে বলে যে, আপনি কথা বলে আমার ভাইদেরকে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তখন আমি সরল বিশ্বাসে সিরাজ উদ্দিন ফারুকীকে বলি রাসেল ও পিয়াস কে বিদেশ নিয়ে আসেন।
তখন উক্ত সিরাজ উদ্দিন কোম্পানীর তিনটি ভিসা প্রদান করেন। তখন একটি ভিসার মাধ্যমে রাসেলের ভাই পিয়াস ও হাসানের ভাই কিরন বিদেশ যেতে সক্ষম হয় এবং একটি ভিসা কাজি সাইম (ফিরোজ) কে দেওয়া হয়। তখন যথারিতি ভিসা পেয়ে হাসানের ভাই কিরণ ও রাসেলের ভাই পিয়াস সৌদি আরবে পৌছায়। পৌছানোর পর তারা উক্ত কোম্পানীর মানুষের সাথে দেখা না করে সৌদি আরব বিমান বন্দর থেকে হাসানের ভাই কিরনকে ও রাসেলে ভাই পিয়াস কে গোপনীয় ভাবে অন্যত্র সরিয়ে নেয়। কোম্পানী তাদের খোঁজ না পাওয়ায় সিরাজ উদ্দিন কে উক্ত লোকের খোঁজ চাইলে সিরাজ উদ্দিন আমাকে বিষয়টি অবহিত করে, পরে আমি সহ সিরাজ উদ্দিন তাদের খোঁজ করে ও জানতে পারি যে, কিরন ও পিয়াস রাসেলের হোটেলে কাজে যোগদান করেছে।
এমতাবস্থায় আমি তাদেরকে উক্ত কোম্পানীতে যোগদানের জন্য অনুরোধ করলে তারা আমার কথা অমান্য করে। কিরন উক্ত হোটেলের চাকুরী ১ বছর ২ মাস ও পিয়াস ৩ বছর ০৬ মাস হোটেলে কর্মরত ছিল। এরপর তারা দেশে ফিরে এসে আনুমানিক ০৬ বছর পর আমার নিকট হইতে সর্বমোট ৯,৬০,০০০/- (নয় লক্ষ ষাট হাজার) টাকা দাবী করে। কিন্তু বিদেশ যাওয়ার সময় তারা আমার নিকট নগদ কোন টাকা প্রদান করে না, তবে কিছু পরিমান টাকা আমার বড় ভাই বাচ্চুর নিকট প্রদান করে এবং বাকী টাকা সিরাজ উদ্দিন ফারুকীর মাধ্যমে লেনদেন সম্পন্ন করে এবং কাজি সাইম কোন কারন বশতঃ বিদেশ যেতে না পারায় তাকে সিরাজ উদ্দিন এর নিজ নামীয় উত্তরা ব্যাংকের ৫,০০,০০০/- (পাচঁলক্ষ) টাকা চেক প্রদান করেন। কিন্তু কাজী সাইম উক্ত টাকার চেকটি ব্যাংক থেকে ডিজঅনার করে বাসায় ফেলে রাখে। উক্ত চেকটি মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় ব্যাংক চেকটি বাতিল বলে ঘোষণা করে। এমতাবস্থায় রাসেল, কিরণ, পিয়াস, কাজী সাইম, যৌথ ভাবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ও মনগড়া তথ্যাদি এলাকায় ছড়ায় এবং সংবাদ প্রচার করে, আমাকে সামাজিক ভাবে হ্যানস্থা, হেয়প্রতিপন্ন করে আমাকে ও আমার বড় ভাই বাচ্চু কে নানা বিদ ভাবে সমাজে হয়রানী করছে।
এ সময় কোন কোন মিডিয়ায় এ সংবাদ প্রচার হয়েছে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমি এখন পর্যন্ত আনান্দ টিভি, গ্লোবালটিভিতে সংবাদ দেখেছি।
আমি উক্ত প্রচারিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আমি প্রিয় সাংবাদিক ভাইদের নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি উক্ত সত্য ঘটনা আপনাদের লেখনির মাধ্যমে তুলে ধরে সকলের মাঝে সত্য প্রকাশ করার জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
উক্ত সংবাদ সম্মলনে উপস্থিত হয়ে ভাড়ইমারী সরদার পাড়ার মৃত চাঁদালি মল্লিকের ছেলে রিপন বলেন, এই রাসেল আমাকে নানাভাবে প্রলোভন দেখিয়ে বলে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি কথা বলে। পরে বলে বিদেশ যেতে হলে দুই ভাইয়ের ১৩ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তখন আমরা দুই ভাই জায়গা জমি বিক্রি করে বাড়ি ঘর বন্ধক রেখে রাসেলের পিতা আজিবর সরদারের কাছে টাকা জমা দেই। টাকা জমা দেওয়ার দুই মাস পরে ফ্লাইট হয় আমাদের। আমার এক মাস পর আমার আরেক ভাইয়ের ফ্লাইট হয়।
আমরা সৌদি আরবে যাওয়ার পরে আমাদের তার হোটেলে কাজ দেয়। ১২ ঘন্টা কাজের কথা বলে আঠারো ঘন্টার বেশি কাজ করিয়ে নেয়। তিন মাস কাজ করার পর বেতন চাইলে আমাদের ওপর নানা রকম অত্যাচার, জুলুম, নির্যাতন করতো কারেন্টের শক দিতো, ঠিকমত খেতে দিত না মারধর করত। দীর্ঘ আট মাস কষ্ট সহ্য করে কাজ করার পরে আমরা দুইভাই পালানোর চেষ্টা করি। কিভাবে ওরা টের পেয়ে আমাদের একটি ঘরে বন্দি করে রাখে। আমাদের ঘুমের ওষধ খাওয়াতো এবং কারেন্টে শক দিত। আমাদের ওপর অনেক অত্যাচার ও লাঞ্ছিত করে যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। পরে আমার চাচতো ভাই সোহেল এর মাধ্যমে আমরা অনেক কষ্ট করে দেশে ফিরে আসি।
রেজাউল নামের আরেক বিদেশ ফেরত ভুক্তভোগী বলেন, আমাদের মাসে ৫০ হাজার টাকা বেতনের চাকরির লোভ দেখায়। তারপর বলে প্রতিমাসের টাকা প্রতি মাসে শোধ করে দেবো কোন সমস্যা হবে না। তখন আমি বলি আমরা গরীব মানুষ বুঝে শুনে টাকাগুলো নিয়েন। তখন সে বলে ঠিক আছে কোন সমস্যা হবে না তোমরা যাও আমার ছেলে আছে যাক কাগজপত্র করার আমার ছেলে ঠিক করে দিবে। তখন তার কথামত আমরা টাকা পয়সা জমা দিয়ে সৌদি আরবে চলে যাই। যাওয়ার পরে আমাদের কাজে ঠিক মত বেতন দিত না বাড়ি থেকে ফোন করে টাকা চাই তো আমরা দিতে পারতাম না। টাকা চাইলে অনেক অত্যাচার করত, লাঞ্চিত করতে, মারধর করতো। এভাবে নয় মাস কাজ করার পর। একটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে সই করিয়ে নেয়। পড়ে আমরা অনেক কষ্ট করে আমার চাচতো ভাইয়ের মাধ্যমে আমরা দেশে ফিরে আসি।