বিদায়ের পথে পৌষ, আসছে মাঘ। প্রবাদ আছে ‘মাঘের শীতে বাঘ পালায়’; আবহমানকালের এই প্রবাদের সত্যতাও দৃশ্যমান প্রকৃতিতে। পৌষের শেষার্ধে চার জেলায় শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে হিম হাওয়ায় কাঁপছে দেশের বিস্তীর্ণ জনপদ। এরই মধ্যে বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এ যেনো ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’!
রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) দুপুর পর্যন্তও দেখা মেলেনি সূর্যের; ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসে জবুথবু অবস্থা রাজধানীসহ উত্তরাঞ্চল জুড়ে।
এদিন সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে মধ্য রাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও তা গড়াতে পারে দুপুর পর্যন্তও। বিঘ্ন ঘটতে পারে বিমান, নৌ ও সড়কে যানবাহন চলাচলে। এছাড়া সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও দিনের তাপমাত্রা কমে ঠান্ডা পরিস্থিতি চলতে পারে। আর বর্ধিত পাঁচদিনের পূর্বাভাসে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলি ও চুয়াডাঙ্গায়, ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাবনার ঈশ্বরদীতে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও দিনাজপুরে ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
বড় এলাকাজুড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়; ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। সেই হিসেবে চার জেলায় এখন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
তবে এই শৈত্যপ্রবাহের ব্যাপ্তি ধীরে ধীরে কমে আসবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘শৈত্যপ্রবাহ যেটা আছে, আস্তে-আস্তে কমবে। কারণ তাপমাত্রা বাড়বে, দুই-এক দিনের মধ্যে শৈত্যপ্রবাহ কমে আসবে। তবে দিনের কুয়াশাচ্ছন্ন অবস্থা আরও দুই-তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে, যার কারণে শীতের অনুভূতি থাকবে।’
ঢাকায় আজ উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৬ শতাংশ।
শনিবারের (১৩ জানুয়ারি) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
এছাড়া সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে, দেশের কোথাও কোথাও দিনেও ঠান্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।