- বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের ভোটে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে বগুড়া জেলা রিটানিং অফিসার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভোট বর্জনের কাগজ জমা দেন তিনি।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সারাদিন নির্বাচন মাঠে ঘুরেছি। আমার এজেন্টরা বলেছে, তাদের বলা হয়েছে, আলম যদি কেন্দ্রে আসে তখন তাকে যেন বলা হয় ভোট খুব ভালো হচ্ছে। কিন্তু আমরা চলে আসার পর দুপুরে লাঞ্চের সময়ে তারা সিল মারছে। এ ছাড়া, কিছু সিল মারাই নিয়ে এসেছিল ওরা। আমরা যখন কেন্দ্রে যাই তখন প্রতিটি কেন্দ্রে ২টা, ১৫টা, ৯৬টা করে ভোট পড়েছে।’
হিরো আলম বলেন, গতকাল যে নির্বাচন হয়েছে এটা নাটকীয় নির্বাচন। আমি ভোট করতে চাইছিলাম না। ভোট একটা কারণেই করেছি, এই আসনে প্রতিবারই দুর্নীতি করা হয় আমার ওপর। এবারও করবে সেটা আমি আগে থেকেই জানতাম। দেশবাসীর কাছে এটা প্রমাণ করার জন্যই আমি নির্বাচনের মাঠে ছিলাম। আমি ইচ্ছে করলে গতকাল সকালেই ভোট বর্জন করতে পারতাম। কিন্তু করিনি। কারণ আপনারা শেষ পর্যন্ত দেখেন মাঠে কি হয়।’
এ সময় হিরো আলম বলেন, ‘জিয়াউল হক বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা। তার তো এত ভোট পাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। যে জায়গায় বিএনপি ভোট দিতে যায়নি, সেখানে উনি এত ভোট পেলেন কোথায়?’
হিরো আলম অভিযোগ করেন, ‘প্রিসাইডিং অফিসাররা যখন কেন্দ্র থেকে রেজাল্ট ঘোষণা করবে তার আগে আওয়ামী লীগের লোকজন তাদের গণনাকৃত ফলাফলের রেজাল্ট শিট ছিঁড়ে ফেলে দিয়ে তাদের তৈরি রেজাল্ট শিট হাতে ধরিয়ে দেয়। পরে তাদের রেজাল্ট শিট দিয়ে ঘোষণার নির্দেশ দেন। এভাবে প্রতিটি কেন্দ্রে অনিয়ম করেছে। কাজেই আমি এই ফলাফল মানি না।’
হিরো আলম বলেন, ‘আমি এবার ভোট পেয়েছি ২৪ হাজার ৬০০। কিন্তু আমার ভোট দেখানো হয়েছে মাত্র ২ হাজর ১০০টি। আমি প্রথমে যখন ওখানে যাই তখন নৌকা পেয়েছে ৬ হাজার ভোটের মতো। কিন্তু পরে নৌকায় সিল মেরে ভোট দেখিয়েছে ২৫ হাজার। ঈগল মার্কা ভোট পেয়েছে ১০ হাজারের মতো। আমার যারা এজেন্টরা ছিল তারা আমাকে এগুলো জানিয়েছে।’
আলোচিত এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর বলেন, ‘গতবারের মতো এবারও ভোটের চাল খাটাইছে। গতবার আমাকে ৮০০ কয় ভোটের ব্যবধানে তানসেনের কাছে পরাজিত দেখানো হয়েছিল। এবার ঈগলকে দেখানো হয়েছে ১০০ কয় ভোটে ফেল করেছে। সারাজীবন কী খালি এক-দেড়শ ভোটে ফেল দেখায়? ২-৪ হাজার ভোট কি কেউ কম বেশি পায় না? তানসেনের কি জনপ্রিয়তা এতই বেশি? আমার কি জনপ্রিয়তা এতই কম। যে জায়গায় গতবার আমি ১৯ হাজার ভোট পেয়েছিলাম। এবার ২ হাজার ভোট পাই। হিরো আলমের জনপ্রিয়তা কি এতই কমে গেছে? যে হিরো আলম ভোট পায়নি?’
উল্লেখ্য, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে গতকাল সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান হিরো আলম। তিনি বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের বাংলাদেশ কংগ্রেসের হয়ে ‘ডাব’ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।