দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘নির্বাচনের নামে ৭ জানুয়ারির বানর খেলার আসরে অংশ নেবেন না। আপনারা কেউ ভোট কেন্দ্রে যাবেন না। এটি আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার।’
বুধবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে ভার্চুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন ।
রিজভী বলেন, ‘স্বাধীনতার গত ৫২ বছর পেরিয়ে এখন চূড়ান্ত ক্রান্তিকাল চলছে বাংলাদেশে। গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার, ভোটাধিকার, অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান, বেঁচে থাকার অধিকার, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি, আন্দোলন-সংগ্রামের অধিকারসহ সকল অধিকার ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে। বাংলাদেশকে একটি রাষ্ট্রের স্যাটেলাইট স্টেট করার চক্রান্ত চলছে। এই ভয়াবহ অনিশ্চিত, অন্ধকারময় সময়ে দেশের জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে অধিকার আদায়ে প্রাণপণ লড়াই করছে বিএনপিসহ দেশের সকল দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল। গত দেড় দশকের মতোই আগামী ৭ জানুয়ারী ভোট ডাকাত, গণবিচ্ছিন্ন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা আরও একটি পাতানো একতরফা ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার সীলমোহর নেয়ার পরিকল্পনা করেছে। এই পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের সিপাহসালার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আজ এক যুগান্তকারী কর্মসূচি অসহযোগ আন্দোলন ঘোষণা করেছেন।’
রিজভী বলেন, ‘সামাজিক মূল্যবোধের চূড়ান্ত অবক্ষয় ঘটেছে। দেশের প্রতিটি সাংবিধানিক, বিধিবদ্ধ এবং স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের চরিত্র নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এবার সর্বশেষে পরিকল্পিতভাবে বিনষ্ট করে দেয়া হচ্ছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে বিনাভোটে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে দুর্নীতিগ্রস্ত বণিক, আমলা, পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীদের নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে একটি মাফিয়া চক্র। এরা দেশে এখন দুর্নীতি আর লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। দুর্নীতিবাজ লুটেরা চক্রকে প্রতিহত করে জনগণের রাষ্ট্রে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠার এখনই চূড়ান্ত সময়।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের দুর্নীতি অনাচারের কারণে দেশে বর্তমানে কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, স্বল্প আয়ের মানুষ লাঞ্ছিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত। দুর্নীতিবাজদের উল্লাস নৃত্যের আড়ালে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে মধ্যবিত্ত, নিম্নধবিত্তসহ সকল মজলুমের হাহাকার-আর্তনাদ। দেশের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না, অথচ প্রতিদিন বেড়েই চলছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। মানুষ চাল কিনলে ডাল আর ডাল কিনলে চাল কেনার টাকা থাকে না। ডিম কিনলে পেঁয়াজ, আবার পেঁয়াজ কিনলে কাঁচা মরিচ কেনার টাকা শেষ। এভাবে দেশের অধিকাংশ জনগোষ্ঠীকে অর্ধাহারে অনাহারে রেখেই উন্নয়নের নামে চলছে বলগাহীন দুর্নীতি। তাই আপামর জনগণের স্বার্থবিরোধী এই ফ্যাসিস্ট হাসিনার মাফিয়া সরকারকে প্রতিহত করে শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষের সরকার প্রতিষ্ঠার এখনই চূড়ান্ত সময়।’