শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মজিবুর রহমান জানান, গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বুদ্ধিজীবীদের সাথে নিয়ে চলমান আন্দোলনকে আরও জোরদার করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, একদলীয় নির্বাচন করার জন্য সরকার গণতন্ত্র হত্যা করে দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। একতরফা নির্বাচন আয়োজনের জন্য রাতেও আদালত বসিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সাজা দেওয়া হচ্ছে। যেসব মামলায় সাজা দেওয়া হচ্ছে এইসব মামলা মিথ্যা-বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশে করা হয়েছে।
দেশের বুদ্ধিজীবীদের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, জীবনকে সত্যের সাক্ষ্য বানাতে দেশে গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে হবে। যারা বাংলাদেশে স্বাধীনতার ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছেন, যারা চিন্তা চেতনা বুদ্ধি ও ত্যাগ-কোরবানির বিনিময়ে দেশের সার্বিক কল্যাণের জন্য ভূমিকা রেখেছিলেন তাদের সবার জন্যই দোয়া করছি। আল্লাহ তায়ালা যেন তাদেরকে পুরস্কৃত করেন। তিনি গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বুদ্ধিজীবীদের সাথে নিয়ে চলমান আন্দোলনকে আরও জোরদার করার উদাত্ত আহ্বান জানান।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও প্রচার সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ ও খ্যাতিমান প্রবীণ সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদ। এ ছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির ও এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন। কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে দেলওয়ার হোসাইন ও ড. আবদুল মান্নান সহ ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ।
অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন, বুদ্ধিজীবী তারাই যারা জনগণ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ করে। রাষ্ট্রীয় অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এবং ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ায়। যারা নিজের নফসকে ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে তারা বুদ্ধিজীবী নয় বরং তারা গাফেল। আর এই গাফেলরা মহান আল্লাহ নেয়ামতের শুকরিয়াও আদায় করে না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলে দেশ স্বাধীন করা হলো অথচ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার উঠিয়ে দিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। তারা ২০১৪ সাল ও ২০১৮ সালের মতো করে আবারও জোর করে নির্বাচনের নামে প্রহসন করে ক্ষমতা আকড়ে রাখতে চাচ্ছে। আজ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা কেউ নিজ বাড়িতে থাকতে পারছে না। বিভিন্নভাবে তারা অত্যাচার ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে শুধু বাংলাদেশের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করার কারণে। দেশ ও জাতিকে রক্ষায় চলমান আন্দোলন সংগ্রামে সবাইকে নিজ নিজ স্থান থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহবান জানান তিনি।
নূরুল ইসলাম বুলবুল সভাপতির বক্তব্যে বলেন, দেশে আজও বুদ্ধিজীবীরা নিরাপদ নয়, তাদের বাক-স্বাধীনতা নেই। ডিজিটাল আইন নামক কালো আইন দিয়ে বুদ্ধিজীবী ও সচেতন নাগরিকদের টুটি চেপে ধরা হয়েছে। গত কয়েক দিনে পাতানো নির্বাচনের অংশ হিসেবে ৬৮টি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় প্রায় ১ হাজার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সাজা দেওয়া হয়েছে।