পূর্বশত্রুতার জেরে বগুড়ায় সাবেক কাউন্সিলরের ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী আরিফ মণ্ডল হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জেলা পুলিশের পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারা হলেন- বগুড়া শহরের নিশিন্দারা পূর্ব খাঁপাড়া এলাকার সাকিব শেখ ও সানমুন শেখ ওরফে সালমান এবং একই এলাকার হিমেল শেখ। এদের মধ্যে সাকিবের নামে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, আরিফের ভাগনে মুহিমের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির জের ধরে ৭ অক্টোবর সাকিবকে চাকু মেরে গুরুতর আহত করে আরিফ। এ ঘটনায় সাকিবের বাবা মিলু বাদী হয়ে আরিফকে প্রধান আসামি করে বগুড়া সদর থানায় মামলা করেন। পরে আরিফকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। সেখানে ১৮ দিন থাকার পর আরিফ জামিনে মুক্ত হলে সাকিব ও তার সঙ্গীরা মিলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের সুলতানগঞ্জপাড়ায় হাঁসুয়া, এস এস পাইপ ও লোহার রড নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। এ সময় আরিফ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তার পথরোধ করে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর আসামিরা প্রথমে জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে থাকে। এমনকি তারা হিলি বর্ডার দিয়ে দেশের বাইরে যাওয়ারও চেষ্টা করে। কিন্তু কোনো উপায় না পেয়ে তারা পরিকল্পনা পরিবর্তন করে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে অবস্থান নেয়। তাদের পরিকল্পনা ছিল মসজিদে পূর্ব থেকে অবস্থানরত তাবলিগ জামাতের মুসল্লি সেজে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে আত্মগোপন করবে। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বগুড়া সদর থানার টিম, অ্যান্টি-টেররিজম ইউনিট ও গোয়েন্দা বিভাগের সহযোগিতায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ সুপার বলেন, আসামিদের আদালতে পাঠানো হবে। এ ছাড়া এ ঘটনায় জড়িত বাকি পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ, সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শাহীনুজ্জামান প্রমুখ।
এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের সুলতানগঞ্জপাড়া এলাকায় বগুড়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর জহুরুল ইসলামের ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী আরিফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।।